শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) রেজিস্ট্রার ড. মুহা. মোস্তাফিজুর রহমান। রোববার (১৯ মার্চ) বিকেল ৩টার পর উপাচার্যকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত জানান তিনি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রেজিস্ট্রার পদত্যাগ করবেন বলে আমাকে তার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তার এ সিদ্ধান্তের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এখন অনেকটা শান্ত। 

তিনি বলেন, জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তার মৃত্যুজনিত কারণে গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। কমিটিকে ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান উপাচার্য।

এর আগে রোববার (১৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর গ্রিন রোডে ক্যাম্পাসের সামনে রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে কালো পতাকা, ব্যাচ ধারণ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, গত ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হোসেন আত্মহত্যা করেন। তার আত্মহত্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান ও তার সহকারী জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা তামিম জোবায়েরকে দায়ী করে এর বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে আবেদন করেন তার ভাই ফরিদ হোসেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে ফারুকের আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ায় রেজিস্টারকে অপসারণের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে তারা চার দফা দাবি জানান।

এর মধ্যে ছিল- এ ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে শাস্তি দেওয়া ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রেজিস্টারকে তার পদ ও সব কার্যক্রম থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা। একই সঙ্গে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দ্বারা হয়রানি, মানহানি, অপমান ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা, কতিপয় কর্মকর্তা মিলে আলাদা প্রশাসনিক কাঠামোর বলয় ভাঙা এবং তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদতদানকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। রেজিস্টারের অধীনস্থদের নিয়ম বহির্ভূত কাজে বাধ্য করা, জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত, প্রমোশন আটকানো এমনকি গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েবসহ সব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের ব্যবস্থা করা।

এনএম/ওএফ