করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত বছর থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্সটি অনলাইনে করা হচ্ছে। বাধ্যতামূলক এই কোর্সে অংশ নিয়ে সময়মতো কোর্সের ভাতা পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।

অভিযোগকারী শিক্ষকরা জানান, একজন সরকারি প্রাথমিক শিক্ষককে দেড় বছরের ডিপিএড কোর্সটি করা বাধ্যতামূলক। এ কোর্সে অংশ নেওয়া একজন শিক্ষককে প্রতি মাসে তিন হাজার করে টাকা দেয় সরকার।

ডিপিএড প্রশিক্ষণার্থী অনেক শিক্ষক ছয় মাসের ভাতার টাকা পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন কি এ টাকা পাবেন কি না তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। যে কারণে প্রশিক্ষণ ভাতা নিয়ে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই কোর্সে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা কিট অ্যালাউন্স বাবদ ১৮ হাজার টাকা ও প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। ছয় মাস পরপর এ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু এবার অনলাইনে কোর্স নেওয়ায় অনেক শিক্ষককে এখনো এ টাকা দেওয়া হয়নি।

মোমিনুল হক নামে এক প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক বলেন, ডিসেম্বরে প্রশিক্ষণ ভাতার টাকা পাওয়ার কথা। এপ্রিল মাস চলছে, কিন্তু এখনো টাকা পাইনি। আমাদের কোর্স বাকি আর মাত্র দু’মাস। এ বিষয়ে ওপরমহল থেকেও কোনো নির্দেশনা আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। 
ঊর্ধ্বতনদের উচিত আমাদেরকে ধোঁয়াশায় না রেখে প্রাপ্য অর্থ দিয়ে দেওয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ডিপিএড শুরু হয়ে প্রায় শেষের পথে। শিক্ষাবর্ষের সরাসরি কার্যক্রম চলেছে গত বছরের ১৬ মার্চ পর্যন্ত। করোনার কারণে ১৭ মার্চ থেকে সাময়িক সময়ের জন্য কার্যক্রম বন্ধ হয়। পরে ১ জুলাই থেকে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে ডিপিএড কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।

প্রশিক্ষণার্থীদের মাধ্যমে জানা যায় যে, কেউ কেউ তিন মাসের প্রশিক্ষণ ভাতা পেয়েছেন। অথচ ডিসেম্বর পেরিয়ে গেলেও পরবর্তী ভাতার খোঁজ নেই।

এ বিষয়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) পরিচালক মো. ইউসুফ আলী বলেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রশিক্ষণ সামনাসামনি হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে এমন যুক্তি দেখানো হয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষণ অনলাইনে চলেছে। সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষণার্থীরা ভাতা প্রাপ্য। এখন বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সহকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সমিতির সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, অনেক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ভাতা এখনো পাননি। অথচ এটি শিক্ষকদের ন্যায্য টাকা। এ বিষয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদেরকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

এনএম/ওএফ