প্রতি বছর প্রাথমিক স্তুরের ১০ কোটির বেশি বই ছাপানো হয়। সেই কাজ এতদিন জাতীয় কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) করে আসছে। কিন্তু সেই বই ছাপানোর কাজ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ছাপাতে চায় গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত সম্মতি মিলেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রাথমিক স্তুরের বই নিজেরাই ছাপানোর কাজ শুরু হবে।  

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

তিনি বলেন, এনসিটিবির কাজ কারিকুলাম তৈরি ও পর্যালোচনা করা। বই ছাপানোর কাজটি প্রশাসনিক। অন্যদিকে এনসিটিবি প্রাথমিকের বই ছাপাতে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচ, সময় ও জটিলতা তৈরি হচ্ছে। প্রাথমিকের বই ছাপানোর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেয়। কিন্তু সেই অর্থে এনসিটিবি বই ছাপায়। 

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক প্রতিটি বই ছাপানোর জন্য এনসিটিবিকে দুই টাকা ৬০ পয়সা করে সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। সে হিসেবে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ কোটি সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বই ছাপালে এই টাকাটা সরকারের সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে বইয়ের মান খারাপ হলে কখনও প্রাথমিক অধিদপ্তর, এনসিটিবি একে অন্যকে দোষারোপ করে। যেহেতু এনসিটিবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান। তাই গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কোনো তদারকি ও খবরদারি করতে পারে না। প্রাথমিক অধিদপ্তর বই ছাপার কাজটি করলে তদারকি ও মান রক্ষা করতে সহজ হবে। 

ফরিদ আহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশে প্রাথমিক স্তরে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী আছে। তাদের জন্য প্রতিবছর ১০ কোটির বেশি বই ছাপানো হয়ে থাকে। ১৩ বছর ধরে ৯৮ লটে ৩০-৩২টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব বই মুদ্রণ করা হচ্ছে। এই বই নিয়ে ৮-৯ বছর ধরে নানান সিন্ডিকেট কাজ করছে। এ জন্য বইয়ের মুদ্রণ ও কাগজের মান নিয়েও প্রতি বছর প্রশ্ন উঠছে। এসব বিতর্ক এড়াতেই প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবই নিজেরাই ছাপানোর উদ্যোগ নেয়। ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বৈঠক করে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি চাওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রী কিছু সংশোধনী পাঠান। সেগুলোর সংশোধন করে ফের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় দফার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সায় মিলেছে বলে জানান সচিব। 

গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) পাঠ্যবই মুদ্রণের দায়িত্ব নিতে চায়। কিন্তু এটি করতে হলে এনসিটিবির আইনে পরিবর্তন আনতে হবে। তার জন্য  আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হবে। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

এনএম/কেএ