জাল চিঠি-ভুয়া নিয়োগ বোর্ড : ৩ মাদ্রাসা প্রধান ও নিয়োগপ্রাপ্তদের শোকজ
জাল নিয়োগ লেটার, ভুয়া নিয়োগ বোর্ড ও মিথ্যা ফলাফল শিট তৈরির অভিযোগে তিনটি দাখিল মাদ্রাসার প্রধান ও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি এমপিও (মাসিক পেমেন্ট অর্ডার) সুবিধা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে তাদের ব্যাখ্যা চেয়ে শোকজ নোটিশও জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থ শাখা থেকে জারি করা তিনটি পৃথক স্মারকে এ তথ্য জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাগুলো হলো– ভোলার চরফ্যাশনের আমিনাবাদ হাকিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বড়ঘাট গমির উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা এবং খুলনার কয়রার জয়পুর শিমলার আইট দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা।
বিজ্ঞাপন
প্রথম ঘটনায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ হাকিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধির জাল পত্র তৈরি করেছেন। এ ছাড়া তিনি একটি ‘ভুয়া’ নিয়োগ বোর্ড গঠন ও জাল ফলাফল শিট তৈরির মাধ্যমে সহকারী গ্রন্থাগারিক হাসান (ইনডেক্স নম্বর B0068248)কে ৩০ জানুয়ারি ২০২১ এবং সহকারী শিক্ষক (আইসিটি) আমিনুল ইসলাম (ইনডেক্স নম্বর : B0065440)কে ১৫ মার্চ ২০২৫ তারিখে নিয়োগ দেন।
দ্বিতীয় ঘটনাটি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বড়ঘাট গমির উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসাকে ঘিরে। সেখানে সুপার আব্দুল আওয়াল মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রতিনিধির জাল চিঠি তৈরি করে সহকারী গ্রন্থাগারিক আক্তারুন নাহার (ইনডেক্স নম্বর : M0063228)কে নিয়োগ দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞাপন
তৃতীয় অভিযোগটি খুলনার কয়রা উপজেলার জয়পুর শিমলার আইট দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার বিরুদ্ধে। এখানে সুপার মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি একটি ‘ভুয়া’ নিয়োগ বোর্ড গঠন এবং জাল ফলাফল শিট তৈরি করে সহকারী গ্রন্থাগারিক মো. জিয়াউর রহমান (ইনডেক্স নম্বর : M0073940)কে নিয়োগ দিয়েছেন।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ও এমপিও বাছাই ও অনুমোদন কমিটির সদস্য সচিব মো. বুলবুল আহম্মেদ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ এর ধারা ১৮.১ (গ) ও (ঙ) অনুসারে সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতা (এমপিও) সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, অভিযুক্ত মাদ্রাসা প্রধান ও নিয়োগপ্রাপ্তরা কেন তাদের এমপিও সুবিধা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে না এবং নবনিযুক্ত ব্যক্তিদের ইনডেক্স কেন কর্তন করা হবে না, সে সম্পর্কে ১৯ নভেম্বরের (বুধবার) মধ্যে প্রয়োজনীয় দলিলসহ সন্তোষজনক লিখিত জবাব দিতে হবে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিয়োগে অনিয়মে আমাদের নিয়মিত তদারকি অব্যাহত রয়েছে। এখন যে অভিযোগ এসেছে তা গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ছাড়া ভবিষ্যতেও এসব বিষয়ে তদন্ত ও অপরাধ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরএইচটি/এসএসএইচ