ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র স্কুলিং কাঠামোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করছেন। তারা বলছেন, এই কাঠামো বাস্তবায়িত হলে কলেজের ইন্টারমিডিয়েট বিভাগ বিলুপ্তি এবং প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষী ঐতিহ্য ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইনে স্কুলিং কাঠামো অন্তর্ভুক্ত করা হলে ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট বিভাগ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষের ঐতিহ্য বিনষ্ট হবে বলে তারা মনে করছেন।

উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিল হাসান বলেন, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় আইনে শুধু ইন্টারমিডিয়েট বিভাগই ঝুঁকিতে নেই, ঢাকা কলেজের স্বকীয়তা ও গৌরবময় ইতিহাস মুছে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই কলেজ শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। আমরা চাই, সরকার আমাদের এই ঐতিহ্য রক্ষা করতে স্কুলিং কাঠামোর পরিবর্তে একটি সমন্বিত ও স্বতন্ত্র মডেল গ্রহণ করুক, যেখানে ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট কার্যক্রম তার নিজস্ব নাম ও পরিচয়ে অব্যাহত থাকবে।

আরিফুল ইসলাম নামের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে পড়ার স্বপ্ন নিয়ে আমরা এখানে এসেছি। এখানে ইন্টারমিডিয়েট বিলুপ্তি মানে দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর জন্য একটি প্রেরণার উৎসকে হারানো। আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না যে আমাদের পরের প্রজন্ম ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র বলে পরিচিত হবে। একইসাথে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠন করতে গিয়ে ঢাকা কলেজের বিদ্যমান কাঠামো ও দুই বছরের মেয়াদি উচ্চমাধ্যমিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেটিও মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই৷ 

এর আগে, গত ১৪ অক্টোবর ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ সংশোধনের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছিল ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা।

তবে এরইমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলসহ রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নতুন একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ধারণা, অসম্পূর্ণ তথ্য বা গুজবের ভিত্তিতে বিভ্রান্তি বা পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি না করে সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করবেন। একইসাথে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান শিক্ষা জীবন এবং সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার জন্যও বিশেষভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরএইচটি/জেডএস