দাবির বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকেরা আজও লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন। এর ফলে দ্বিতীয় দিনের মতো স্থগিত রয়েছে প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা, আর মাধ্যমিকেও বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষার কার্যক্রম। দুই পর্যায়ের শিক্ষকরা পরীক্ষাবর্জন, খাতা মূল্যায়ন বন্ধ ও কর্মবিরতি বজায় রাখায় শিক্ষা কার্যক্রমে তৈরি হয়েছে ব্যাপক অচলাবস্থা।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কাসেম মোহাম্মদ শামছুদ্দীন জানান, মঙ্গলবারও (২ ডিসেম্বর) আগের মতো পরীক্ষা বর্জনসহ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে। 

তিনি বলেন, ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় দিনের মতো সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষাবর্জন ও কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। সহকর্মী শহীদ ফাতেমা আক্তারের আত্মত্যাগ ও দুই শতাধিক শিক্ষকের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতির আলোকে ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের তিন দফা দাবি হলো—

১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা।
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা দূর করা।
৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা।

এদিকে, এন্ট্রি–পদের বেতন ৯ম গ্রেডসহ চার দফা দাবিতে দুই দিনের অবস্থান কর্মসূচি ও আলটিমেটাম শেষে কোনো সমাধান না পেয়ে সোমবার থেকে ‘পূর্ণদিবস কর্মবিরতি’ শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তাদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা, এসএসসি নির্বাচনি পরীক্ষা ও খাতা মূল্যায়ন থেকেও শিক্ষকরা বিরত থাকবেন।

তবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এক অফিস আদেশে জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি সব নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক, নির্বাচনী ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই সম্পন্ন করতে হবে। জারি হওয়া আদেশে বার্ষিক পরীক্ষা ২০ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর, নির্বাচনী পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর এবং জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়।

পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য আঞ্চলিক উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সব বিদ্যালয়ের প্রধানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশে আরও বলা হয়— পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বা কর্মকর্তার শৈথিল্য বা অনিয়ম ধরা পড়লে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে শিক্ষকরা তাদের দাবিতে এখনও অনড় অবস্থানেই রয়েছেন। 

আরএইচটি/জেডএস