ভর্তি বিলম্ব, চিন্তায় অপেক্ষমাণ তালিকার শিক্ষার্থীরা

স্কুলগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে অপেক্ষামান তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের
লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাইয়ের তিনদিন পার হলেও ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়নি সরকারি স্কুলগুলোতে। শিক্ষার্থী ভর্তি কবে শুরু হবে তাও জানানো হচ্ছে না। এতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা সমসংখ্যক ৭৭ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) সারাদেশে সরকারি বিদ্যালয়ে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে প্রথম থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৭৭ হাজার ১১৪টি শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ভার্চুয়ালি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে সফটওয়্যারে এ লটারি করা হয়। এদিন সমসংখ্যক আসনের বিপরীতে অপেক্ষমাণ তালিকাও প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সন্তানদের ভর্তি চিন্তায় থাকা অবিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রথম মেধা তালিকা থেকে যারা ভর্তি হবে না, সে আসনের বিপরীতে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। লটারি হওয়ার তিনদিন পার হলেও এখনও ভর্তি শুরু করা হয়নি। প্রথম দফা ভর্তি শেষ না হলে বিদ্যালয়গুলো অপেক্ষমাণ তালিকা শুরু করবে না। তাই প্রথম দফা ভর্তির কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার দাবি তাদের।
ভিকারুননিসা স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে ২৪তম অপেক্ষমান তালিকায় আছেন শাহজাহান মিয়ার মেয়ে সাদিয়া জাহান অর্পিতা। তিনি বলেন, আমার মেয়ে আরও একটি বেসরকারি স্কুলে সুযোগ পেয়েছে। তাকে এখন কোথায় ভর্তি করাবো। ওইখানে ভর্তি করার পর যদি ভিকারুনসিনায় সুযোগ পায় তবে ওই স্কুল তো আমার ভর্তির টাকা ফেরত দেবে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাউশির উপ-পরিচালক (মাধ্যমিক) আজিজ উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভর্তির তারিখ নির্ধারণ করবে স্ব স্ব মহানগর, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে গঠিত কমিটি। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। তবে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছি।
জানা গেছে, এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন সারাদেশের ৩৯০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে ৯ম শ্রেণির ভর্তিতে মোট ৭৭ হাজার ১৪০টি শূন্য আসনে চাহিদা আসে। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয়ভাবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভর্তি লটারি শুরু করা হয়েছে।
প্রথমে রাজধানীর স্কুলগুলো এরপর পর্যায়ক্রমে মহানগরী, জেলা ও উপজেলা শহরের সবমিলিয়ে ৩৯০টি স্কুলে লটারি হয়। লটারির কার্যক্রম বাংলা অনলাইনে প্রচার করা হয়। এছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষকে তার আইডি ও পার্সওয়ার্ড দিয়ে এ লটারি কার্যক্রম দেখার সুযোগ দেওয়া হয়।
লটারির ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে টেলিটক ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ই-মেইলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নির্ধারিত লিংকে গিয়ে প্রতিষ্ঠান সেটি প্রিন্ট করে স্কুলে নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দিয়েছে।
ভিকারুননিস নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা জেলা প্রশাসকের নেত্বত্বে ভর্তি কমিটি তারিখ নির্ধারণ করবে। আমরা কমিটির কাছে সময় চেয়েছি। তারা সময় দিলেই তা ঘোষণা করা হবে। তবে লটারি মাধ্যমে শুন্য আসনের নির্বাচিতদের তালিকা নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
এদিকে ভর্তির আবেদনে নানা ধরনের ভুল ধরা পড়েছে। বালককে বালিকা স্কুলে ভর্তির সুপারিশ করেছে। এছাড়াও ক্যাসমেন্ট এরিয়াসহ আরও কিছু ভুল ধরা পড়ছে। এসব ভুল সংশোধনের জন্য একটি কমিটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, যে ভুলগুলো এখন পর্যন্ত ধরা পড়েছে সেগুলো আবেদনকারীই করেছে। তারপরও এগুলো সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থাকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ ধরনের ভুল হলে তা সংশোধন করা হবে। আর আবেদকারী ভুল করলে তা কিছু করার থাকবে না।
এনএম/এমএইচএস