শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে, শেখ হাসিনার মতো একজন রাষ্ট্রনায়ক পেয়েছি। দেশের জন্য একজন শেখ হাসিনাই যথেষ্ট।’

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একসাথে থেকে অনেক কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তার স্মৃতিশক্তি অসাধারণ। শুধু তাই নয়, তিনি যে সারাদেশ নিয়ে কীভাবে চিন্তা করেন তা বলে বুঝানো যাবে না।’

‘তিনি যখন বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বসেন, কথা বলেন, তখন বিদেশি বিভিন্ন দেশের প্রধানরা খুব মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনেন। কারণ তারা জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো ভিত্তিহীন কথা বলেন না।’

‘যারা বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবারকে সমূলে ধ্বংস করে পাকিস্তানিদের দোসরদের এ দেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তারা জানেন না যে, আদর্শের কোনো মৃত্যু নেই।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তার জন্য কেউ রাস্তায় নামেনি। এটা একেবারেই ভিত্তিহীন। সেদিন রাস্তার নামার সুযোগ দেয়নি। কারফিউ দিয়ে পাঁচ বছর দেশ চলেছে। সবকিছু উলটপালট হয়ে গেল। পাকিস্তানের আদলে হয়ে গেল বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। এর মধ্যে দেশে ফিরে এলেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন মানুষ কেঁদেছে, প্রকৃতি কেঁদেছে। সেদিন মনে হয়েছিল বাংলাদেশ ফিরে এসেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে যে কান্নার সুযোগ পায়নি, শেখ হাসিনা দেশে এলে জাতির পিতাকে হারিয়ে দুঃখে পাওয়া মানুষ নতুনভাবে কেঁদেছিল।’

‘প্রধানমন্ত্রী সেদিন থেকে সবকিছু বিসর্জন দিয়ে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। শোককে শক্তিতে পরিণত করে তিনি এগিয়ে যাচ্ছে অসাধারণ গতিতে। পিতার ও দেশের সবার স্বপ্ন একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। পালটে গেল রাজনীতি পুরো চালচিত্র। নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে অনেক হারে। নারীর সর্বত্র অংশগ্রহণ শেখ হাসিনার অবদান।’

‘খাদ্য ঘাটতির দেশকে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশের পরিণত করেছেন। এজন্য তিনি কৃষকজননী হয়েছেন। কৃষিবান্ধব, শিক্ষাবান্ধব, শ্রমিকবান্ধব, সাহিত্যপ্রেমী, সংস্কৃতিপ্রেমী একজন প্রধানমন্ত্রী কোথায় পাওয়া যাবে? যার কোনো লোভ নেই, অহংকার নেই। এমন একটি মানুষকে বঙ্গমাতা তৈরি করেছেন। বাবা-মায়ের সংগ্রাম দেখে তিনি ধীরে ধীরে আজ নন্দিত নেতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। আমরা উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পেরেছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা শুধু লেখক হলেও দারুণ জনপ্রিয়তা পেতেন। তিনি যখন লেখেন একেবারে প্রাণখুলে লেখেনে। বিশ্বের জন্য একজন সুস্থ শেখ হাসিনা কামনা করছি। আমরা সৌভাগ্যবান। আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘শেখ হাসিনা বহুমাত্রিক পরিচয়ে অনন্যা। তিনি দায়িত্বশীল মা, স্নেহশীলা বোন। তিনি আমাদেরকে শেখান মানুষের জন্য কীভাবে কাজ করতে হবে। কীভাবে ভালোবাসতে হবে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির কন্যা হিসেবে তিনিও নিজের জীবন মানুষের জন্য উৎসর্গ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘হাসিনা শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীত্ব চান না। তিনি এদেশের মানুষের মুক্তি চান। তিনি আমাদের প্রধান শিক্ষক। তিনি আমাদের বাতিঘর।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান বুঝতে হলে আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ভিশন বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের একজন সুস্থ শেখ হাসিনাকে প্রয়োজন। আমরা যত বেশি তার জন্মদিন উদযাপন করতে পারবো এ দেশ তত এগিয়ে যাবে।’

সংগঠনের সদস্য সচিব সৈয়দ জাফর আলী স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘বাঙালির সার্বিক মুক্তির জন্য যার জন্ম হয়েছিল তিনি শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।’ এ সময় তিনি শিক্ষা ক্যাডারে চলমান সংকট তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপুল চন্দ্র সরকার। আলোচনাসভা শেষে শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা ও দোয়া শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এনএম/এইচকে