জিপিএ-৫ পেয়েও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে না লক্ষাধিক শিক্ষার্থী
• সরকারি-মেডিকেলসহ আসন ৬৩ হাজার
• অটোপাসে অতিরিক্ত ৩ লাখ ৭৯ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় থাকবে
  
এইচএসসি ও সমমানের ২০১৯ সালের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন অংশ নিয়ে পাস করে ৯ লাখ ৮৮ হাজারে কিছু বেশি। আর সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ-৫ পায় ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। তারাই মূলত বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিযোগিতায় নামেন। এবার বিশেষ পদ্ধতি মূল্যায়ন করায় ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭জন সবাই পাস। শুধু তাই নয়, গত বছরের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫২১। এক বছরে ব্যবধানে স্বাভাবিকের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২০৫ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ ধারী এক লাখের বেশি। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শতভাগ পাসের সঙ্গে জিপিএ-৫ ও অন্যান্য জিপিএ বাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির অতিরিক্ত চাপ পড়বে। হঠাৎ প্রায় চার লাখ অতিরিক্ত প্রতিযোগী বাড়ার কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনে সংখ্যা বাড়বে। বিশাল এ পরীক্ষার্থীদের ম্যানেজম্যান্ট নিয়েও দুঃচিন্তায় উপচার্যরা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, শতভাগ পাসের কারণে এবার যোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা বাড়বে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রশাসনকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সদ্য প্রকাশিত ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিশেষ মূল্যায়নে ইতিহাসের সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। জেএসডি-এসএসসির গড়ে ফলে উত্তীর্ণ হওয়া এসব শিক্ষার্থীদের এবার টার্গেট উচ্চ শিক্ষায় প্রবেশ। এক্ষেত্রে সবার টার্গেট থাকে মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে। কিন্তু আসন সীমিত হওয়ায় প্রতিটা আসনের বিপরীতে অসম প্রতিযোগিতা হয়। এতে সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ-৫ পেয়েও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি থেকে ছিটকে যায় অনেকে। এবার যেহেতু অন্যান্য বছরের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে তাই উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ঝরে যাওয়ার সংখ্যা আরও বাড়বে। 

বিশ্বেবিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বলেন, এইচএসসি পরীক্ষায় বিশেষ মূল্যায়ন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এসএসসি-এইচএসসির গড় ফলের ওপর নম্বর কমিয়ে এনেছে। 

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিগগিরই ভর্তি নীতিমালা জারি করবে। এবার ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এসব বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে একটি অভিন্ন নীতিমালা করবে। দুই বছর ধরে কৃষিভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি নিচ্ছে। দেশের প্রথম চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় এবার গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তিতে আসার কথা রয়েছে। তবে বুয়েটের একটি সিদ্ধান্তে কারণে তা আটকে আছে। 

পাস ও জিপিএ-৫ বাড়াতে প্রতিযোগিতা বাড়বে
২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের ফলে সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। অন্যদিকে সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট আসন রয়েছে সব মিলিয়ে ৬২ হাজারের কিছু বেশি। অর্থাৎ জিপিএ-৫ পেয়েও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির বাইরে থেকে যাবেন প্রায় ১ লাখ মেধাবী শিক্ষার্থী। এর সঙ্গে ২০১৯ সালের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারা বিশাল একটি সংখ্যা যোগ হবে। এবার যেহেতু শতভাগ পাস করেছে তাই উচ্চ শিক্ষায় অতিরিক্ত ভর্তিও প্রতিযেগিতা বাড়বে। 

শনিবার প্রকাশিত (৩০ জানুয়ারি) ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে ৩০ হাজার ৭৪৮ জন বেশি পরীক্ষার্থী ছিল। কিন্তু শতভাগ পাস হওয়ায় গতবারের চেয়ে এবার বেশি পাস করেছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২০৫ জন শিক্ষার্থী। গত বছরের চেয়ে জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫২১ জন। বাকীরা অন্যান্য গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে। 

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অটোপাসের কারণে এবার উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের বাছাই পরীক্ষায় অতিরিক্ত ৪ লাখ শিক্ষার্থী বেশি প্রতিযোগিতায় নামবে। অটোপাসের পাসের অনেকেই গড় ফল সন্তোষজনক। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন সংখ্যাও বেড়ে যাবে। 

এ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত কয়েক বছরে প্রায় সমান সংখ্যক আসনের বিপরীতে যে প্রতিযোগী ছিল এবার অটোপাসের কারণে সে সংখ্যা বাড়বে। এখন বিশাল এ সংখ্যক পরীক্ষার্থীদের কীভাবে ম্যানেজ করা হবে সেটাই আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় কিছু পরিবর্তন এনেছে। অন্যরাও অটোপাসের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিবর্তন আনবে বলে আমাদের জানিয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার প্রতিযোগীর সংখ্যা বাড়বে এটা বোঝা যাচ্ছে। তবে কাউকে প্রতিযোগিতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। যেভাবেই হউক সবাইকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।      

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জিপিএ-৫ পাওয়ায় পরও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হতে না পারা এসব শিক্ষার্থীদেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত কলেজগুলোতে পড়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। 

ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গত বছর যে সুযোগ ছিল, এবারও স্বাভাবিকভাবে ততটুকুই থাকছে। সবাইকেই এ পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে, বিভিন্নভাবে এ পরীক্ষা হবে। কাজেই সেখানে তাদের মেধার পরিচয় দিয়ে দিয়েই ভর্তির সুযোগ পাবে তারা। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, সব জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পাবে, তা নিশ্চিত নয়। ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের স্থান তৈরি করতে হবে। এবার ভর্তি পরীক্ষায় হয়রানি কমাতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, দেশে সর্বমোট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫২টি। তবে বর্তমানে ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। আর দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩-১৪ লাখ পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে থাকে। তবে দেখা যায়, গড়ে ৪৫-৫০ হাজার শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে থাকে। আর বাকীদের মধ্যে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী বিভিন্ন গ্রেডে পাস করে থাকে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টার্গেট থাকে। এবারও ‘ভর্তি যুদ্ধ’ নামক মেধার লড়াইয়ে নামবে এসব শিক্ষার্থী।

কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কত আসন
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ তথ্যমতে, দেশে ১৪টি সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন রয়েছে ২৯ হাজার ৪৪০টি। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ হাজার ৮০০, রাজশাহীতে ৪ হাজার ৭১৩, জাহাঙ্গীরনগরে ১ হাজার ৮৮৯, চট্টগ্রামে ৪ হাজার ৭০২, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার ৭০৫, খুলনায় ১ হাজার ২২৯, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ায় ২ হাজার ২৭৫, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩১৫, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ১ হাজার ৪০, বরিশালে ১ হাজার ৪৪০, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩৫, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ১০৫টি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০টি। 

অন্যদিকে ১০টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয়ে মোট আসন রয়েছে ১১ হাজার ৩৯৩টি। এর মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৭০৩, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ৯১৫টি, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ২ হাজার ৫টি, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮১৫টি, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১ হাজার ৩৪০, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ৩ হাজার ২৪৫, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ৯২০, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ২৩০ (কৃষি বাদে), রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১০০, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১২০টি।

কৃষিভিত্তিক সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে ৩ হাজার ৫৩৫টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে ১ হাজার ১০৮, শেরে বাংলা কৃষিতে ৭০৪, সিলেট কৃষিতে ৪৩১, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিতে ৩৩০, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেসে ২৪৫, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ৫৬৭টি (কৃষি ইউনিট)। 

ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন রয়েছে ৪ হাজার ১৮০টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ১ হাজার ৩০টি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ৮৭৫, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ১ হাজার ০৫, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), ৭০০টি, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসসি) ৫৭০টি। 

এর বাইরে দেশের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট আসন রয়েছে ১ হাজার ৬২৫টি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে ১০০টি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭৫টি এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) তে আসন রয়েছে ১ হাজার ২৫০টি। 

এ ছাড়াও সরকারি ৩০টি মেডিকেলে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তিযোগ্য রয়েছে তিন হাজার ২৬২টি আসন। বেসরকারি ৬৫টি মেডিকেল কলেজে আসন প্রায় ছয় হাজার। ডেন্টাল কলেজগুলোতে আছে আরও কয়েকশ আসন। 

অর্থাৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল মিলিয়ে আসন আছে ৬২ থেকে ৬৩ হাজার। জিপিএ-৫, জিপিএ-৪ পাওয়া শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টার্গেট থাকে। এ হিসেবে জিপিএ-৫ পাওয়া লক্ষাধিক শিক্ষার্থী তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন না।

২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করা ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন শিক্ষার্থীর বিশেষ মূল্যায়নে সবাই পাস করেছেন। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। 

এনএম/এসএম