বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে আন্দোলনকারী ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আন্দোলনকারীদের ডেকে আমরা কথা বলেছি। আমরা বলেছি, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির কিছু কাজ বাকি রয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগ দেবেন। এরপর শূন্যপদ পূরণে দ্বিতীয় মেধাতালিকা দেব আমরা। সেজন্য কিছুটা দেরি হবে। 

তিনি বলেন, আমরা মার্চের শেষে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির কাজ শুরু করব এবং এপ্রিলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

এ বিষয়ে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী এম এ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল এনটিআরসিএ অফিসে যায়। আমাদেরকে ডেকে পাঠান এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান। এ সময় এনটিআরসিএ সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, মার্চের মধ্যে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির কাজ শুরু করে এপ্রিলের মধ্যে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান। সেজন্য আমরা অনশন কর্মসূচি শেষ করার ঘোষণা দিয়েছি।

জানা গেছে, রোববার সকালে ই-রিকুইজিশনের মাধ্যমে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের আমরণ অনশন শুরু হয়। এরপর দুপুর ১টার পরে তারা যান ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় অবস্থিত এনটিআরসিএ অফিসের সামনে। সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলকে ডেকে পাঠায় এনটিআরসিএ। 

সম্প্রতি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনকারীরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২ মে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আমরা শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার আবেদন করি ২৩ মে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা শেষে গত বছরের ১৭ অক্টোবর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

ভাইভা পরীক্ষার মাত্র ৭ দিন বাকি থাকায় আমরা তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম। করোনা মহামারির কারণে আমাদের লিখিত ও ভাইভার ফল প্রকাশে অনেক দেরি হয়েছে। বর্তমানে আমাদের অনেকের বয়সই ৩৫ পার হয়ে গেছে বা কাছাকাছি রয়েছে। আমাদের শিক্ষক হওয়ার লালিত স্বপ্ন আজ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা এখন চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির আশায় দিন গুনছি। আমাদের ১৮ হাজার ৫০০ জনের পরিবারের অসহায়ত্ব ও বয়সের কথা বিবেচনা করে বর্তমানে সারা দেশের শূন্যপদের তথ্য নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাধিত করবেন।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীদের অধিকাংশই ইনডেক্সধারী হওয়ায় এবং নারী কোটা ও অন্য ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থী না থাকায় ১৫ হাজার ৩২৫টি পদ ফাঁকা রয়ে যায়। এই অবস্থায় শিক্ষক সংকট দূর করতেই বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে এনটিআরসিএ। তবে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশীদের দাবি, ই-রিকুইজিশন নিয়ে সমন্বয় করে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক। এতে শূন্য পদ পূরণ সম্ভব।

এএজে/ওএফ