অভিনয় জীবনের শুরু থেকেই রিয়া সেনকে পর্দায় উপস্থাপন করা হতো ভিন্নভাবে। বিভিন্ন ফটোশুটেও নিজেকে খোলামেলা ভাবে উপস্থাপন করতে দেখা গেছে। রিয়ার নিজেরও দাবি, ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেক কিছু বুঝতেন না, যা বলা হত, তাই করতেন। ছোট পোশাক পরতে রাজি হয়ে যেতেন। সেজন্য তার নামের পাশে ‘যৌন আবেদনময়ী’ অভিনেত্রীর তকমাটা গেঁথে গিয়েছিল!

এ কারণেই কি একটা সময়ের পর বলিউডকে বিদায় জানাতে বাধ্য হন সুচিত্রা-নাতনি? 

তার বোন রাইমা সেন সাঁতারের পোশাকে যতই ছবি দিন, ‘আবেদনময়ী’ তকমা যেন রিয়া সেনের জন্যই তোলা! সেই ছবিতে নেটিজেনরা কমেন্টস করেন রিয়ার তুলনা করে। বহুবার গা-ঢাকা পোশাকে ছবি দিয়েও মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ছোট নাতনির ছবিতে মন্তব্য জুটেছে ‘মারাত্মক উষ্ণ’! শুধুই ছবি নয়, বলিউডে যে ক’টি ওয়েব সিরিজ, সিনেমা করেছেন তাতেও তার অভিনীত চরিত্র এবং নামের পাশে একই ট্যাগ।

শুক্রবার বলিউড সংবাদমাধ্যম সব প্রশ্নের জবাব নিয়ে হাজির হন রিয়া। যেখানে রিয়ার দাবি, অভিনয় দুনিয়ায় আসার আগে থেকেই তার গায়ে এই তকমা। রিয়ার আফসোস, ‘মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় প্রথম শুনি, আমি সেক্সি! সেই শুরু। অত ছোট বয়স থেকে যৌনতার এই তকমা বহন করে চলতে হয়েছে আমায়।’ অভিনেত্রীর মতে, এই কথা শুনতে শুনতে হাঁফিয়ে উঠতেন তিনি।

এর পরে অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখেন রিয়া। সেখানেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। অভিনেত্রীর বলেন, ‘তখন আমি খুবই ছোট। যা বলা হত, তাই করতাম। ছোট পোশাক পরতে রাজি হয়ে যেতাম। চড়া রূপসজ্জা করতাম।’ এতে তার ‘যৌন আবেদন’ যে আরও জোরালো হয়ে উঠত, বুঝতে পারেননি।

রিয়ার অকপট স্বীকারোক্তি, ‘আজ বুঝি, মুঠো মুঠো ছবিতে অভিনয়ের পরেও কেন হাতেগোনা কয়েকটি ছবি দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছিল। সবাই কেন বলতেন, রিয়া বাজে অভিনেত্রী। কেবল যৌন আবেদনময়ী। দর্শক, সমালোচকদের কোনো দোষ নেই। আমাকে প্রায় সব ছবিতেই ওইভাবে দেখানো হয়েছিল।’ অভিনয় থেকে অনেক দূরে থাকা অভিনেত্রী আজ যখন তার অভিনীত ছবি দেখেন, নিজেই সেটা বুঝতে পারেন। একই সঙ্গে লজ্জায় কুঁকড়ে যান। তার মনে হয়, যেটা তিনি নন সেটাই জোর করে দিনের পর দিন পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন।

এই জন্যে আগে রিয়াকে দেখলে নাকি লোকের আচরণ বদলে যেত। রিয়ার দাবি, সবাই মনে করতেন পর্দার আর বাস্তবের রিয়া এক। তিনি আর যৌনতা অভিন্ন। কিছুতেই কাউকে বোঝাতে পারতেন না, আদতে তিনি শরীরসর্বস্ব নন। তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। দর্শক মনে ছাপ ফেলেছে তার নীচু মানের ছবি। তাই ভাবমূর্তি বদলাতে বলিউড থেকে, অভিনয় থেকে এক সময় নিজেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হন তিনি।

এসএম