টানা ৮ মাসের লড়াইয়ের পর অবশেষে ঘোষণা করা হলো ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এর বিজয়ীর নাম। তিনি আর কেউ নন, সবার পছন্দের পবনদীপ রাজন। প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই নিজের মিষ্টি ও সুরেলা কণ্ঠে সাধারণ দর্শক-বিচারক ও বলিউডের তারকাদের মুগ্ধ করে এসেছেন তিনি।

শনিবার (১৫ আগস্ট) দীর্ঘ ১২ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে বিচারকদের রায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন পবনদীপ। পুরস্কার হিসেবে তিনি পেয়েছেন একটি গাড়ি এবং ২৫ লাখ রুপি।

অবশ্য চ্যাম্পিয়ন হয়ে খুব বেশি উচ্ছ্বসিত নন পবনদীপ। তার মতে, ফাইনালে আসা প্রত্যেক প্রতিযোগী চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যোগ্য। তরুণ এই গায়কের ভাষ্য, ‘আমরা সবাই একটা পরিবার। যে-ই পুরস্কার জিতুক না কেন, সে আমাদের বন্ধু। তাই আমি পুরস্কার জেতায় খুব বেশি আনন্দিত নই।’

পবনদীপের জন্ম ১৯৯৬ সালের ২৭ জুলাই ভারতের উত্তরাখণ্ডের অপূর্ব পাহাড়ি শহর চম্পাবতে। সংগীতে তার হাতেখড়ি বাবা সুরেশ রাজনের কাছ থেকে। যিনি স্থানীয় পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয় একজন লোকশিল্পী। পবনদীপের বোন জ্যোতিদীপও গায়িকা।

সুকণ্ঠের অধিকারী এই গায়ক গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন উত্তরাখণ্ডের কুমাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। গাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজাতেও পটু তিনি। গিটার, কিবোর্ড, তবলা, পিয়ানো ও ঢোলকের মতো বাদ্যযন্ত্র তার হাতে সুরের ঝংকার তোলে।

একেবারে ছোটবেলা থেকেই সংগীতে বিস্ময়ের প্রমাণ দিয়েছিলেন পবনদীপ। মাত্র ২ বছর বয়সে তিনি সবচেয়ে কমবয়সী তবলাবাদক হিসেবে পুরস্কার জিতেছিলেন। চন্ডিগড়ের ‘রেইট’ নামের একটি ব্যান্ডের হয়ে গান করতেন তিনি।

২০১৫ সালে তিনি টেলিভিশন রিয়্যালিটি শো ‘দ্য ভয়েস ইন্ডিয়া’তে অংশ পবনদীপ। এই আয়োজনে তিনি ছিলেন বিখ্যাত গায়ক শানের দলে। এই দলটাই ওই সিজনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সে সময় পুরস্কার হিসেবে ৫০ লাখ রুপি এবং একটি গাড়ি পেয়েছিলেন। ওই প্রতিযোগিতার পর পবনদীপ বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন। সে সুবাদে নিজের একক ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। সিনেমাতেও গান করেছিলেন এ গায়ক। এছাড়া নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে নতুন নতুন গান প্রকাশ করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

দুবাই, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকাসহ এক ডজনের বেশি দেশে গিয়ে কনসার্ট করেছেন তিনি। তার অসামান্য সাফল্যের সুবাদে উত্তরাখণ্ড রাজ্য সরকার তাকে ওই রাজ্যের ‘তরুণ শুভেচ্ছাদূত’ হিসেবে ঘোষণা করে।

কেআই/আরআইজে