১৫ কেজি ওজন কমিয়েছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেন। ওজন এখন ৭১ থেকে ৫৬ কেজিতে এসেছে। বাড়তি ওজন ঝরিয়ে মেদহীন ছিপছিপে চেহারায় তাক লাগাচ্ছেন এ অভিনেত্রী। তার এ পরিবর্তনে আপ্লুত প্রেমিক অঙ্কুশ হাজরাও। প্রেমিকাকে নিয়ে কতটা গর্বিত, দিন কয়েক আগেই ঘোষণা করেছেন ঘটা করে। প্রশংসায় পঞ্চমুখ অনুরাগীরাও। কিন্তু যাকে নিয়ে এত চর্চা, সেই ঐন্দ্রিলা কী বলছেন? কেন হঠাৎ ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত?

ঐন্দ্রিলা জানালেন, লকডাউনে বাড়িতে বসে ওজন বেড়ে যাচ্ছিল তার। চার দিকে লাগাতার অসুস্থতা, মৃত্যুর খবরে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত নায়িকা শরীরচর্চার উৎসাহ পাচ্ছিলেন না। ‘ম্যাজিক’-এর সময়ে খানিক ওজন কমেছিল ঠিকই। কিন্তু ঐন্দ্রিলা মনে করেছিলেন, টালিউডে মনের মতো চরিত্র পাওয়ার জন্য তা যথেষ্ট নয়। অগত্যা গত বছরের জুন থেকে শুরু করেন শরীরচর্চা। নায়িকা বললেন, জুন মাস থেকে আমি শরীরচর্চা শুরু করলাম। প্রথম দিকে খুবই কষ্ট হতো। মিষ্টি খাওয়া একেবারেই ছেড়ে দেই। অন্যান্য খাবারও খুব কম খেতাম। প্রথম দু’মাস  ওজন কমেনি। সেই দু’মাস আমি কঠিন শরীরচর্চার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলাম।

১৫ কেজি ওজন কমাতে কোন ধরনের ডায়েট মেনে চলতে হয়েছে নায়িকাকে?

ঐন্দ্রিলা জানান, শরীরচর্চার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াতেও লাগাম টানতে হয়েছিল তাকে। তবে মেনে চলেননি বাঁধা ধরা কোনো ডায়েট। ১৪-১৬ ঘণ্টা উপোসের পক্ষপাতী ছিলেন না ‘ফাগুন বউ’-এর ‘মহুল’। তাই শরীরচর্চা প্রশিক্ষক তাকে দিনে খুব অল্প পরিমাণে ছয় বার খেতে বলেছিলেন। খাবারের তালিকায় ছিল কুসুম ছাড়া দিনে ছয়টি ডিম সেদ্ধ। সকাল, দুপুর এবং রাতে দু’টি করে ডিম খেতেন ঐন্দ্রিলা। দুপুরে সবজির স্যুপ, প্রোটিন শেক বা ফল। তার মধ্যে খিদে পেলে খেতেন শশা। নৈশভোজে ফের থাকত প্রোটিন শেক। এভাবে কিছুদিন চলার পর দুপুরে অল্প পরিমাণ ভাত খাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। তবে তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল ব্ল্যাক কফি, জুসের মতো পানীয়।

বেশ খানিকটা ওজন কমিয়ে ফেলার পর নায়িকা ছাড় পেয়েছেন এ কড়া ডায়েট থেকে। বাড়িতে মায়ের তৈরি খাবার খান তিনি। ইচ্ছে হলে মনের মতো মাছ বা মাংসের ঝোল আর ভাত দিয়ে সেরে নেন মধ্যাহ্নভোজন। কেক, প্যাস্ট্রির মায়া ত্যাগ করতে হলেও ফ্রিজে থাকে ডার্ক চকলেট। আর কফিতে সাধারণ দুধের পরিবর্তে ব্যবহার করেন কাঠবাদামের দুধ। চিনির পরিবর্তে গুড়। তবে সপ্তাহে একদিন ফুচকা না হলে ঐন্দ্রিলার চলে না। ঝালঝাল আলুমাখা আর টক জল দিয়ে মনের সুখে ফুচকায় পেট ভরান নায়িকা।

নিজের বর্তমান চেহারা নিয়ে সন্তুষ্ট ঐন্দ্রিলা। তিনি বলেন, ওজন কমিয়ে আমি খুবই খুশি। অনেকেই বলছেন আমার চোখ-নাক-মুখ বদলে গেছে। আমি নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছি। শরীরের মেদ কমলে মুখেরও মেদ কমে। ফলে চোখ-নাকের আকৃতিরও পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয়।

এক যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন ছোট পর্দায়। গত বছর ‘ম্যাজিক’ ছবিতে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। এরপরও পেয়েছিলেন একাধিক ছবির প্রস্তাব। কিন্তু ওজনের কারণে সেগুলোতে অভিনয় করতে রাজি হননি ঐন্দ্রিলা। বলেন, দু’তিনটি ছবি আমি চেহারার জন্য ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু চাইনি এত বছর কাজের পর মানুষ ভাবুন, আমি কাজ করতে আগ্রহী নই। আমার কাছের মানুষরা সেই সময়ে আমাকে ওজন কমানোর জন্য উৎসাহ দিয়েছিলেন।

ঐন্দ্রিলার জবাব, আমি খোলামেলা ভাবেই বলছি টলিউডে এ চল রয়েছে। কোনো প্রযোজকের সঙ্গে দেখা হলেই তিনি বলতেন, তোকে না ওজনটা একটু কমাতে হবে। আমি তাদের দোষ দেব না। আমরা এখনও নিজেদের পক্ষে এমন কোনো ছবি দিতে পারিনি, যা দেখে মনে হবে ওজনটা আসলে কোনো বিষয়ই না। বলিউডে বিদ্যা বালান, ভূমি পেডনেকরা সেটা করে দেখিয়েছেন।

ঐন্দ্রিলা আশাবাদী, পরবর্তী সময়ে তিনিও এমন চরিত্রে অভিনয় করবেন, যা দেখে তাকে আর ওজনের নিক্তিতে বিচার করা হবে না।

এসএসএইচ