ভারতীয় সিনেমার দুই মহাতারকা দিলীপ কুমার ও অমিতাভ বচ্চন। রূপালি পর্দার সাফল্যের পরিসংখ্যানে দু’জনই প্রথম সারিতে। তবে বয়সে অমিতাভের চেয়ে ২০ বছরের বড় দিলীপ। এছাড়া দিলীপ কুমার যখন সুপারস্টার, তখন অমিতাভ বচ্চনের ক্যারিয়ার শুরুই হয়নি।

পঞ্চাশের দশকেই আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন দিলীপ কুমার। অন্যদিকে অমিতাভের ক্যারিয়ার শুরু হয় সত্তর দশকের গোড়ার দিকে। সেই হিসেবে ছোটবেলা থেকেই দিলীপ কুমারের ভক্ত ছিলেন অমিতাভ। ইচ্ছে ছিল, কোনো এক দিন প্রিয় তারকার অটোগ্রাফ নেবেন। কিন্তু কে জানত, এই একটা অটোগ্রাফের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে ৪৮টা বছর!

অমিতাভ বচ্চন এক স্মৃতিচারণে জানান, দিলীপ কুমারের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয় ১৯৫৯ সালে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে; যেখানে দিলীপ কুমার সবান্ধবে উপস্থিত হয়েছিলেন। বাবা-মার সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সী অমিতাভ। কিন্তু তখন দিলীপকে ঘিরে ছিল ভক্তদের ভিড়। তাই আর অটোগ্রাফ নেওয়া হয়নি।

কয়েক বছর পর আরেকটি সুযোগ আসে অমিতাভের কাছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু একটা পার্টি দিয়েছিলেন। দিলীপ কুমার, দেব আনন্দ, রাজ কাপুর ছিলেন সেখানে অতিথি। সুযোগক্রমে সেখানেও গিয়েছিলেন অমিতাভ। কিন্তু অটোগ্রাফ নিতে পারেননি।

এমনকি ১৯৮২ সালে ‘শক্তি’ সিনেমায় দিলীপ কুমারের সঙ্গে কাজ করলেও অটোগ্রাফ নেওয়ার ইচ্ছেটা পূরণ হয়নি অমিতাভ বচ্চনের। অবশেষে তার স্বপ্ন পূরণ হয় ২০০৫ সালে। সে বছর মুক্তি পায় তার ও রানি মুখার্জি অভিনীত ‘ব্ল্যাক’ সিনেমাটি। রানির আমন্ত্রণে স্ত্রী সায়রা বানুকে নিয়ে সিনেমাটি দেখতে এসেছিলেন দিলীপ কুমার। দেখার পর মুগ্ধ হন তিনি। সেই মুগ্ধতা থেকে অমিতাভ বচ্চনকে একটা দীর্ঘ চিঠি লেখেন কিংবদন্তি এই অভিনেতা।

চিঠিতে অমিতাভকে নিয়ে অনেক প্রশংসাবাক্য ছিল। কিন্তু তার সবচেয়ে কাঙ্খিত অংশ ছিল চিঠির নিচে। সেটা হলো দিলীপ কুমারের স্বাক্ষর। কারণ দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে তিনি এই অটোগ্রাফের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন!

কেআই/আরআইজে