ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘সাইকো’। দেশজুড়ে সিঙ্গেল স্ক্রিনে সিনেমাটি ভালো সাড়া পাচ্ছে বলেই দাবি এর নির্মাতা-শিল্পীদের। দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখতে তারা ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের ছায়াবানী সিনেমা হলে যান চিত্রনায়ক রোশান,  নায়িকা পূজা চেরি ও নির্মাতা অনন্য মামুনসহ সিনেমাটির সংশ্লিষ্ট কয়েকজন।

ফেসবুকে জানান দিয়ে এসেছিলেন রোশান-পূজারা। তাই এদিন উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় ছায়াবানী হলে। ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করে উচ্ছ্বসিত দর্শকের সঙ্গে বসেই সিনেমাটি উপভোগ করেন তারকারা।

সিনেমার প্রচারণায় এসে দর্শকের সঙ্গে শুধু কথাই বলেননি, তাদেরকে গান গেয়েও শোনালেন পূজা-রোশান। অনুরোধটা ছিল নির্মাতা অনন্য মামুনের। এরপর পূজা গলা ছেড়ে গাইলেন সিনেমার টাইটেল সং ‘আমি সাইকো’। তার সঙ্গে হলভর্তি দর্শকও গলা মিলিয়েছে।

পূজার পর রোশান গাইলেন সিনেমার রোমান্টিক গান- ‘আহারে, তোর জন্য কত মায়ারে’। এভাবেই প্রায় আধাঘন্টা দর্শকদের সঙ্গে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মাতেন তারা। এরপর দু’তলার ডিসিতে বসে দর্শকদের সঙ্গে পুরো সিনেমাই দেখেন পূজা-রোশানরা।

হলের ভেতরে দর্শকের সঙ্গে কথা বলছেন রোশান-পূজা-মামুন

এক ফাঁকে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ‘সাইকো’র অভিনেতা-অভিনেত্রী ও পরিচালক। দর্শক সিনেমাটি পছন্দ ও প্রশংসা করছেন জানিয়ে নায়িকা পূজা চেরি বলেন, ‘দর্শকের সাড়া পেয়েই এতো এতো জায়গায় ছুটছি। যদি সাড়া না-ই পেতাম, তাহলে তো ঘরের এক কোণে বসে ফেসবুক দেখতাম, না হয় অন্য সিনেমা দেখতাম। এই ভ্যাপসা গরমে হলে হলে দৌড়াতাম না।’

দর্শকের ভালোবাসায় আপ্লুত পূজা আরও যোগ করেন, ‘আমি যে কয়টা হলে গিয়েছি, সবগুলোতেই ভালো রেসপন্স পেয়েছি। যত দিন যাচ্ছে সেই রেসপন্স আরও ভালো হচ্ছে। এসব প্রতিক্রিয়া সত্যিই মনে রাখার মতো।’

ঈদে মোট তিনটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে নানান তর্ক-বিতর্ক চলছে। এটা অনুচিত বলে মনে করেন পূজা। তার ভাষ্য, ‘নিজের সিনেমা ভালো, অন্যের সিনেমা খারাপ বলাটা একেবারেই উচিত নয়। এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়, যেটার কারণে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। একে-অপরের সিনেমার প্রশংসা করলে ইন্ডাস্ট্রি আরও বড় হবে। এতে নতুন নতুন প্রডিউসার আসবে, তারা টাকা ইনভেস্ট করতে উৎসাহ পাবে। কাদা ছোঁড়াছুড়ি করলে তো প্রডিউসাররা পালাবে।’

ঢাকা পোস্টের মুখোমুখি পূজা চেরি

‘সাইকো’ সিনেমা নিয়ে রোশানের মন্তব্য, “ঈদে মানুষ চায় ভিন্নরকম সিনেমা। যেটাতে অ্যাকশন, রোমান্স, এক্সপ্রেশন থাকবে। সুন্দর সুন্দর গান, সুন্দর লোকেশানে আইটেম সং। সবকিছু মিলিয়ে ‘সাইকো’ একটি কমপ্লিট প্যাকেজ। সিনেমা হলে এসে মানুষের রেসপন্স দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। কঠোর পরিশ্রমের পর মানুষ আসলে এমন দিনটাই আশা করে।”

এদিকে নির্মাতা অনন্য মামুনের কাছে প্রশ্ন ছিল, সিনেমাটির লগ্নি কতটুকু উঠে এসেছে? জবাবে তিনি বললেন, ‘এখনকার সময়ে শুধু হলের ব্যবসা দিয়ে লগ্নি ফেরত সম্ভব নয়। ডিজিটাল প্লাটফর্মের বেশ কিছু উপায়ে আমরা আমাদের লগ্নি ফেরতের হিসাব করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিনেমা কখনো বাজেটের ওপর নির্ভর করে না। বাজেট দিয়ে কখনো সিনেমা হয় না। গল্প দিয়ে সিনেমা হয়। এই বিষয়টি আমাদের মানতে হবে। একটা ‘জোকার’-এর বাজেট আর ‘টাইটানিক’-এর বাজেট যদি এক জায়গায় মিলাতে চাই, তাহলে সেটা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। স্টোরি ডিপেন্ড করবে আসলে আপনি কী বাজেট নিয়ে কাজ করবেন।”

উবায়দুল হক/কেআই/আরআইজে