বেশ কিছু দিন ধরেই দেশের মিডিয়া অঙ্গনে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। কয়েকজন মডেল-অভিনেত্রী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। তিনি মাদকসহ র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। বর্তমানে তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

মিডিয়ার এই সার্বিক অবস্থা নজরে এসেছে সংগীত তারকা ও অভিনেতা তাহসানের। তিনি বিষয়টি নিয়ে নিজের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। একটি সংবাদ সংস্থার সাক্ষাৎকারে তাহসান বলেন, ‘প্রতিটা পেশার মানুষের কিছু ক্ষমতা আছে। আবার প্রতিটা পেশাতেই কিছু পেশাগত ঝুঁকি বা ঝামেলা আছে। যেমন; একজন ফায়ারফাইটারের (দমকলকর্মী) পেশাগত ঝুঁকি হলো, তিনি যেকোনো মুহূর্তে পুড়ে যেতে পারেন। আবার যারা আইনশৃঙ্খলার পেশায় আছেন, তারা যেকোনো সময় বন্দুকযুদ্ধে হতাহত হতে পারেন। আর বিনোদন জগতের পেশাগত ঝুঁকি হলো গসিপ বা রটনা। আমাদের নিয়ে কথা বলতে মানুষ পছন্দ করে। এটা আমরা জেনেই কিন্তু এই জগতে আসি। কিছু সময় মুখরোচক গল্পগুলো সত্য হয়, আর কিছু সময় এগুলো একদমই সত্য নয়।’

তাহসান আরও বলেন, ‘যেরকম পেশাগত ঝুঁকি আছে, সেরকম ক্ষমতাও আছে। যেমন আমি চাইলেই এই মুহূর্তে ফেসবুক লাইভে গিয়ে কোটি মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারি। এটা আমার একটা ক্ষমতা। মানুষ আমাকে হয়ত সম্মান করে, ভালোবাসে; তারা আমার কথা শুনবে। কিন্তু সমস্যা হলো, প্রতিটা পেশার কিছু মানুষ তাদের পেশাগত ক্ষমতার অপব্যবহার করে। আর আমরা একটা ভুল করি, কোনো পেশার দুই-চারজন মানুষ যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তখন পুরো পেশাটাকেই তকমা লাগিয়ে দেই- পেশাটা খারাপ।’

কোনো পেশার নাম উল্লেখ না করে তাহসান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেকটা পেশাকেই কোনো না কোনোভাবে গালি দেওয়া হয়। শোবিজে যারা কাজ করেন, তাদেরও আমরা এক ধরণের তকমা লাগিয়ে দেই। এ কারণেই কিন্তু শিক্ষিত পরিবার থেকে বেশি মানুষ মিডিয়া জগতে আসে না। আবার শিক্ষিত মানুষেরা আসে না বলেই কিন্তু মিডিয়ার ইমেজটা ওরকম থেকে যাচ্ছে। শিক্ষার অভাবে কিছু মানুষ হয়ত খারাপ পথ বেছে নিচ্ছে, অথবা কিছু মানুষে এই গ্ল্যামারাস জগতটাকে ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ চরিতার্থ করছে।

প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে এই তারকা বললেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, এটা কি সব পেশাতেই নেই? সব পেশাতেই ভালো-খারাপ আছে। যেহেতু আমাদের পেশায় মূল প্রতিবন্ধকতা গসিপ, সুতরাং খারাপ বিষয়টা নিয়েও মানুষ অনেক বেশি ঢোল পিটিয়ে বলে।’

গুটিকয়েক মন্দ ব্যক্তির কাজের জন্য খারাপ তকমা নিতে রাজি নন তাহসান। তার ভাষ্য, ‘আমার পেশা নিয়ে যখন খারাপ কথা শুনি, তখন আমারও খারাপ লাগে। কিন্তু তাই বলে কি সেই খারাপ লাগা নিয়ে আমি বসে থাকব? না, আমি তো আমার কাজটা করে যাব। হাজার হাজার গুণী শিল্পী বছরের পর বছর ধরে বিনোদন জগতে এত ভালো কিছু করল, তাহলে অল্প কয়েকজন মানুষের নেতিবাচক কাজের জন্য আমরা তো সেই তকমাটা নিতে রাজি হব না।’

কেআই