সার্বক্ষণিক অক্সিজেন সরবরাহের মধ্য দিয়ে উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীর হলি ‍ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে স্থাপন করা হয়েছে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট। এটি ৯৫ শতাংশ বিশুদ্ধতার সঙ্গে মিনিটে ৭৫০ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন ও সরবরাহ করতে সক্ষম বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) হাসপাতালের বহির্বিভাগ সংলগ্ন নবনির্মিতি অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আবদুল ওয়াহ্‌হাব, আইএফআরসি এশিয়া প্যাসিফিকের রিজিওনাল ডিরেক্টর আলেকজান্ডার ম্যাথিও এবং অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি এনা লেমিং।

জানা গেছে, আইএফআরসি ও অস্ট্রেলিয়ান এইডের সহযোগিতায় এবং অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সার্বিক সহায়তায় স্থাপিত এই প্ল্যান্টটি পুরোদমে চালু হলে হাসপাতালের জন্য ঘণ্টায় ৪৫ হাজার লিটার অক্সিজেন তৈরি করা যাবে, যা হাসপাতালের শতভাগ চাহিদা মেটাবে।  

এসময় এটিএম আবদুল ওয়াহ্‌হাব বলেন, বাংলাদেশ করোনা মহামারির ভয়াবহতা কিছুটা কাটিয়ে উঠলেও এখনো এর সংক্রমণ পুরোপুরি থেমে যায়নি। করোনার সংক্রমণের শুরুর দিকে সেই সংকটাপন্ন সময়ের ভয়াবহতা মাথায় রেখেই হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আমাদের এই প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।

জরুরি সংকট মোকাবিলায় প্ল্যান্টটি অত্যন্ত সময়োপযোগী উদ্যোগ উল্লেখ করে প্ল্যান্ট স্থাপনের পাশাপাশি কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন কার্যক্রমে বিডিআরসিএসকে সহায়তার জন্য আইএফআরসি, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন এবং অস্ট্রেলিয়ান রেড ক্রসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে কোভিড-১৯-এর কঠিন সময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের খাদ্য সহায়তা, অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা, ঘরে ঘরে অক্সিজেন সরবরাহসহ মানবকল্যাণে বিডিআরসিএসর কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিরলস কর্মতৎপরতার প্রশংসা করে আলেকজান্ডার ম্যাথিও বলেন, আমরা বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে কাজ করতে পেরে এবং হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ‍করতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। এর আগে আমরা আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) সংস্কার ও সম্প্রসারণ এবং অ্যাম্বুলেন্স সহায়তাসহ জরুরি ও জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এসময় অত্যাধুনিক এই অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্টের মাধ্যমে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের জরুরি চিকিৎসা সেবা আরো ত্বরান্বিত হবে এবং এই উদ্যোগ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আনিসুজ্জামান। 

এদিকে, অক্সিজেন প্ল্যান্টের পাশাপাশি হাসপাতালটিতে ১৫০০ কেভিএ সক্ষমতার একটি ইলেকট্রিক পাওয়ার সাব স্টেশন স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যার মাধ্যমে পুরো হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূর-উর-রহমান, বোর্ড সদস্য রাজিয়া সুলতানা লুনা, শিকদার নূর মোহাম্মদ দুলু, মো. আতিকুল হক শামীম, অ্যাড. শিহাব উদ্দিন শাহীন, আইএফআরসি হেড অব কান্ট্রি ডেলিগেশন সঞ্জীব কাফলে এবং হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আনিসুজ্জামান। 

টিআই/জেডএস