বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সামগ্রিক কার্যক্রম শেষ করার নিদের্শনা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (৫ এপ্রিল) তিনি নির্মাণাধীন ৭০০ শয্যাবিশিষ্ট দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটির নির্মাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে একটি সভা করে সংশ্লিষ্টদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে সামগ্রিক কার্যক্রম শেষ করার নিদের্শনা দেন।

অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। নির্মাণাধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল দক্ষিণ কোরিয়ান সরকারের সহযোগিতার একটি অন্যন্য দৃষ্টান্ত।

তিনি বলেন, বর্তমানে কোরিয়ান প্রতিনিধিরা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরা করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট প্রাদুর্ভাব ও সংকটের মধ্যে দিনরাত পরিশ্রম করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের গতিশীল কর্মকাণ্ডে মহান বিজয় দিবসের ৫০ বছর পূর্তিতে এ হাসপাতালটি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করতে পারবেন বলে আশা করছি।

সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান জানান, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটিতে একজন রোগী একই সেন্টার থেকে সব ধরনের সেবা নিতে পারবেন। হার্ট, কিডনি, লিভারসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের একই সেন্টার থেকে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। বিশ্বমানের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ থাকবে হাসপাতালটি। রোগীদের সব রেকর্ড রাখা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, উপ- প্রকল্প পরিচালক সহকারী অধ্যাপক ডা. নূর-ই-এলাহী প্রমুখ।

সভায় জানানো হয়, ইতোমধ্যে সুপার স্পেশালাইজড হাসাতালের মূল ভবন ২য় তলা বেজমেন্টসহ ১১তলা ভবনের সব ফ্লোর নির্মাণসহ কাঠামোগত (স্ট্রাকচারাল) কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ভবনে ইটের কাজ (ব্রিক ওয়ার্ক), প্লাস্টার, ফিনিশিং ওয়ার্ক, বেস প্যানেল, টেরাকোটা প্যানেল, এলমোনিয়াম লুবার, এলমোনিয়াম শিটসহ অন্যান্য কাজসহ সামগ্রিক কার্যক্রম প্রায় শেষ হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের ভবনের অভ্যন্তরে ফিনিশিং কাজ চলছে।

২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিরপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল হবে একটি রোগীবান্ধব সবুজ হাসপাতাল। হসপিটাল ইনফরমেশন সেন্টার চালু করার মাধ্যমে রোগী ও হাসপাতাল পরিচালনা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাসহ জনসাধারণ এখানে সাশ্রয়ীমূল্যে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা পাবেন। এ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি স্বাস্থ্য সেবার এক নতুন দিগন্ত উম্মোচন করবে। বিশেষ করে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি উন্নত গবেষণা ও প্রশিক্ষণের দিগন্ত প্রসারিত হবে। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটির মাধ্যমে 'বিদেশ নয়, দেশেই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা' দেওয়া সম্ভব হবে। চিকিৎসাসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার সংবিধানের এ স্বীকৃতবাণী বাস্তবায়নে বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।

টিআই/এসএম