কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল

রাজধানীর কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল করোনার টিকাদান কার্যক্রম। সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে ফের টিকা দেওয়া শুরু হলেও কোনো ঘোষণা ছাড়া তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ফিরে যাচ্ছেন অনেক টিকাগ্রহীতা। কবে নাগাদ টিকা পাবেন সেই তথ্যও পাচ্ছেন না তারা।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক মানুষ প্রথম ডোজের টিকা নিতে এসে ঘুরে গেছেন। কোনো ঘোষণা ছাড়া টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ফিরে যাওয়া একাধিক টিকাগ্রহীতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ে এসেও তারা টিকা দিতে পারেননি। কেউ কেউ আবার তিনদিন ধরে ঘুরছেন। কবে থেকে আবার টিকা দেওয়া চালু হবে, সে বিষয়েও কেউ সঠিক কোনো তথ্য দিচ্ছে না বলে তারা অভিযোগ করেন।

টিকা নিতে এসে ঘুরে যাওয়া ভুক্তভোগীরা আরও জানান, এমনিতেই ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। মহামারি থেকে বাঁচতে সরকার টিকার ব্যবস্থা করেছে। সেই টিকা নিতে যদি এমন হয়রানির শিকার হতে হয়, এর চেয়ে দুঃখের কী আছে?

সকাল ১০টার দিকে আরেফিন নামে বেসরকারি এক ব্যাংক কর্মকর্তা হাসপাতালের গেট দিয়ে বের হচ্ছিলেন। আলাপকালে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল টিকা নেওয়ার তারিখ ছিল। কিন্তু জরুরি কাজে আসতে পারিনি। সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পারি, টিকাদান কার্যক্রম চলবে। কিন্তু আজ এসে দেখি বন্ধ।

কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের স্টাফরা জানান, হাসপাতালটিতে গত এক সপ্তাহ ধরে টিকা দেওয়া বন্ধ ছিল। এরপর গতকাল একসঙ্গে প্রায় তিন হাজারের মানুষ টিকা নিয়েছেন। জনবলসহ কিছু সমস্যার কারণে বর্তমানে টিকাদান বন্ধ রয়েছে।

হাসপাতালটির মাঝামাঝিতে অবস্থিত কোভিড-১৯ টিকাদান কেন্দ্রটিতে একটি সাইনবোর্ড ঝুলে আছে। সেখানে কয়েকটি চেয়ার থাকলেও দায়িত্বে কেউ নেই। হাসপাতালটির প্রধান ফটকের পাশে করোনা টেস্টের নমুনা জমা দেওয়ার বুথ। সেখানে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই।

সার্বিক বিষয়ে হাসপাতালটির পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. এ কে এম সরওয়ারুল আলমের কাছে জানতে চাইলে ‘এখন সময় নেই’ বলে প্রতিবেদককে তিনি পরে যোগাযোগ করতে বলেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরিচালকের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, এ হাসপাতালে টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ। এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন প্রায় ৩৬ হাজার। বাকি ১০ হাজার নিবন্ধনের পরও টিকা নিতে আসেননি। আবার ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হবে। সেই প্রস্তুতিও প্রায় শেষের দিকে।

এদিকে ৫ এপ্রিল করোনা টিকার প্রথম ডোজ বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হলেও অধিদফতর পরে জানায়, ‘পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের সঙ্গে প্রথম ডোজও চলবে’। সোমবার (৫ এপ্রিল) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। এছাড়া সরকারিভাবেও এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়।

একে/এমএইচএস