ইয়াসের বৃষ্টিতে ভিজবেন না, বাড়তে পারে করোনা!
কত আর ঘরবন্দি থাকতে ভাল লাগে। ছাদে গিয়ে একটু ঘূর্ণিঝড় উপভোগ করা যাক। শহরের বহুতলে বসে এমন চিন্তা মাথায় ভুলেও আনবেন না। বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর এলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে কয়েকগুণ। চিকিৎসকদের সতর্কবাণী, নিজে তো অবশ্যই, বাড়ির কেউ শত বায়না করলেও তাকে ছাদে যেতে দেবেন না এখন।
উপকূলীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালালেও শহর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মানেই তুমুল বৃষ্টি। বিগত কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল শহরবাসী। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, করোনার কারণে ঘরবন্দি মানুষ হয়তো বেশি করে বৃষ্টিতে ভিজতে চাইবে।
বিজ্ঞাপন
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, করোনার এ সময়টা অন্যান্য সময়ের চেয়ে আলাদা। মনে রাখবেন হাসপাতালে বেড নেই। তা যদি অনুভব করে থাকেন, ছাদে গিয়ে একটু বৃষ্টির ছাট গায়ে মাখলাম এমন চিন্তা আনবেন না। বৃষ্টিতে ভিজে আচমকা জ্বর এলে অনেক বিপদ। বৃষ্টিতে ভিজে যে সর্দি-জ্বর হয় তাও ভাইরাসবাহিত। কিছু ক্ষেত্রে তা করোনাভাইরাস গ্রুপেরই অন্য কোনো ভাইরাস। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস কিংবা এন্টেরো ভাইরাস।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের আবার আশঙ্কার কারণ ছোটদের সাম্প্রতিক অবস্থা। বাচ্চারা টানা অনেকদিন ঘরবন্দি। স্কুল বন্ধ। বাইরে বেরতে পারছে না দীর্ঘদিন। বৃষ্টি পড়লেই তারা ছাদে যেতে বায়না করে। অনেক সময় বাধ্য হয়েই মা-বাবা তাদের অনুমতি দেন।
বিজ্ঞাপন
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বছর বাচ্চাদের বৃষ্টিতে ভিজতে দেওয়া যাবে না। বৃষ্টির সময় বাচ্চাকে কোনও কিছু দিয়ে ভুলিয়ে রাখুন। ইয়াসের বৃষ্টিতে ভিজতে দেবেন না। করোনার কারণে যে জ্বর হয় আর ঠাণ্ডা লেগে যে জ্বর আসে এই দুধরনের ফ্লু-ই কিন্তু ভাইরাসবাহিত। যদি বৃষ্টিতে ভিজে এন্টেরো ভাইরাসের প্রকোপে বাচ্চাটির জ্বর আসে তাহলেই বিপদ। এমন জ্বরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ অনেক কমে যায়।
চিকিৎসকদের কথায়, সাধারণ বৃষ্টিতে ভিজে যে জ্বর আসে তাতে শিশুর ফুসফুসের উপরিভাগে সংক্রমণ দেখা দেয়। এর ফলে মিউকাস মেমব্রেনটা দুর্বল হয়ে পরে। শক্তিশালী মিউকাস মেমব্রেন অনেক জীবাণু থেকে শরীরকে রক্ষা করে। কিন্তু দুর্বল মিউকাস মেমব্রেন বাইরের জীবাণুকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করা থেকে আটকাতে পারে না। এই সুযোগে আঘাত হানতেই পারে সার্স কোভ২।
যদি করোনাভাইরাস গ্রুপের অন্য কোনো ভাইরাস শিশুকে আক্রমণ করে তাহলে সামান্য হলেও নিশ্চিন্ত। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞর কথায়, বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর এলে তা বাড়াবাড়ির আকার ধারণ করতে পারে। হতে পারে নিউমোনিয়াও।
মোট সাতটি গোত্রের ভাইরাসের কারণে সর্দি-জ্বর হয়ে থাকে। এর মধ্যে করোনা গোত্রের অন্য কোনো ভাইরাসের আক্রমণে জ্বর-সর্দি হলে পরবর্তীকালে করোনা হওয়ার সম্ভাবনা সামান্য হলেও কম থাকে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, ঝড় বৃষ্টির সময় যদি একান্তই বাড়ি থেকে বের হতে হয়, সঙ্গে ছাতা রাখুন। বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত বাড়ি থেকে বের হবেন না। যদি মাঝ রাস্তায় বৃষ্টি নামে তাহলে শেডের তলায় গিয়ে দাঁড়িয়ে যান। হাজার ব্যস্ততা থাকলেও করোনার বৃষ্টিতে ভিজবেন না।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
ওএফ