কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি
কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে এনজিও সংস্থা ‘অপরাজেয়-বাংলাদেশ’। মঙ্গলবার (১৫ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে এ দাবি জানানো হয়।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) সহযোগিতায় ‘জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবার বাজেট পর্যালোচনা ২০১৭-২০৩০’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অপরাজেয়-বাংলাদেশ।
বিজ্ঞাপন
আয়োজকরা জানান, অপরাজেয়-বাংলাদেশ গত ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল ২০২১ মেয়াদে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন, বান্দরবান, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলায় একটি প্রকল্প পরিচালনা করেছে। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তরুণদের বিশেষত মেয়েদের সকল ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বাড়ানো, সুরক্ষা এবং যৌন প্রজনন স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি গতিশীল ও সুন্দর নাগরিক সমাজ গঠনে অবদান রাখা।
সংস্থাটি আরও জানায়, সমীক্ষায় কিশোর-কিশোরীদের সাথে ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশনের মাধ্যমে ফলাফল হিসেবে জানা গেছে, সচেতনতা ও তথ্যের অভাবে কিশোর-কিশোরীদের কাছে প্রত্যাশিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সচেতনতা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করার জন্য বাজেটে আরও বরাদ্দ বাড়াতে হবে। কিশোর-কিশোরীদের সাথে ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন ও চাহিদা পর্যালোচনার ফলাফল হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে যে, স্বাস্থ্যসেবা এবং সহায়ক পরিষেবার জন্য যে উপায় কার্যকর রয়েছে তা কিশোরবান্ধব নয়। তাই সুবিধাগুলোর উন্নয়নে বাজেটে আরও বরাদ্দ দরকার।
আরও জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা অনুষ্ঠানের জন্য বাজেটে অনেক বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ কিশোরেরই স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে না। তাছাড়া কিশোর-কিশোরীদের কর্মসূচিতে মনিটরিং ব্যবস্থা খুবই দুর্বল ও হেলথ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালের সূচকগুলো সবদিক যথেষ্ট সম্পৃক্ত করতে পারেনি বলেও জানায় সংস্থাটি।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,বাংলাদেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বর্তমানে দেশে জনসংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশের বেশি কিশোর-কিশোরী রয়েছে। এ কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৭-২০৩০ প্রণয়ন করেছে। তাছাড়া বাজেটের বরাদ্দকৃত অংশ যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিয়মিত পর্যাপ্ত মনিটরিং করাও খুবই জরুরি।
স্বাস্থ্য সেক্টরে এবং বিদ্যালয় পর্যায়ে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার মতো দক্ষ জনবলের অভাব ও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ করে সমাজের অংশগ্রহণ, কিশোর-কিশোরী বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা এবং ঔষধ ও স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ ইত্যাদি কার্যক্রমে আরও তহবিল বরাদ্দ করা উচিত। কিশোর স্বাস্থ্য কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার জন্য ধীর গতিতে তহবিল বিতরণ কাটিয়ে ওঠার জন্য উপযোগী তহবিল বিতরণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতিও তাগিদ দেন তারা।
অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য জাকিয়া পারভীন খানম, সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান, সংসদ সদস্য শামসুন নাহার, পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. নিজাম উদ্দিন আহমদ, নাসিমা আক্তার ডলিসহ অন্যরা।
আরএইচটি/এনএফ