সংগৃহীত ছবি

নতুন কিছু মানসিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করতে দেশের বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। এখন থেকে গ্রাহকরা মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফেসবুকের মাধ্যমেই জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, মনের বন্ধু এবং কান পেতে রই-এর মতো সংস্থার সরাসরি সহায়তা পাবেন।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন থেকে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ নিতে গ্রাহকরা সহজেই হেল্প লাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন।

২০১৯ সালে ফেসবুকের এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ১৭ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগেন। এদের মধ্যে ৯২ শতাংশই কাউন্সিলিং বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাহায্য নেন না।

জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে ফেসবুকের যে চলমান প্রচেষ্টা, এটা তারই একটা অংশ বলে জানিয়েছে জায়ান্ট এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।

ফেসবুকের গ্লোবাল সেফটি পলিসির পরিচালক করুণা নেইন বলেন, এ বছর মহামারী মানুষকে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপনের পাশাপাশি নানাবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হতে বাধ্য করেছে। আমরা তাদের পাশে থাকতে চাই। আমরা  জানাতে চাই যে, তারা একা নয়, আমরা তাদেরকে আশপাশের এমন প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে চাই যারা তাদের কথা শুনবে ও সহযোগিতা করবে।

ফেসবুক মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সমাধান করতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ফিচার তৈরি করছে। ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডস-এ আত্মহত্যা ও আত্মঘাতী কন্টেন্ট প্রতিরোধী নীতিমালা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাদের কাজকে আরও কার্যকর করতে ফেসবুক এবার সূচনা ফাউন্ডেশন এবং মনের বন্ধুর মতো স্থানীয় অলাভজনক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং ডাব্লিউএইচও-এর মানসিক স্বাস্থ্য এবং অটিজম বিষয়ক ডিরেক্টর জেনারেলের উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ বলেছেন, মানসিক অবসাদ মোকাবিলায় সবচেয়ে ভালো উপায়গুলোর একটি হলো পরিবার ও বন্ধুদের সংস্পর্শে থাকা। বাংলাদেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ফেসবুকের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এ বিষয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সহজে যোগাযোগ করতে পারা মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার মনে করেন, মানসিক সমস্যা সম্বন্ধে অজ্ঞতা ও ভুল ধারণা সমস্যাটিকে আরো প্রকট করে তুলছে। সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম মানসিক সমস্যা সম্বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে এ সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুককে এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখার জন্য তিনি স্বাগত জানান।

বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে এমন সংস্থাগুলোর সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ স্থাপন করতে ফেসবুক বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের উপর মহামারীর যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে তা কাটিয়ে উঠতে সবাইকে সহযোগিতা করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। নিজের ক্ষতিসাধনমূলক ছবি যেন কেউ পোস্ট করতে না পারেন সে বিষয়ে ফেসবুক গত বছর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সাধারণ মানুষকে আরও সহজে যোগাযোগ করিয়ে দিতে কাজ করছে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম।

পিএসডি/এমএইচএস