দেশে প্রতি চারজনে একজন স্ট্রোক আক্রান্ত হন। আর স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৯ শতাংশেরই ভুঁড়ি আছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ঢামেকে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারের মূল প্রবন্ধে এ তথ্য জানান নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, স্ট্রোকে আক্রান্তের অন্যতম কারণ মানসিক চাপ। আর এই রোগে আক্রান্তদের ১৭ শতাংশই মানসিক চাপের শিকার।

শফিকুল ইসলাম বলেন, খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ম স্ট্রোকের অন্যতম কারণ হিসেবেও আমরা দেখি। পরিসংখ্যান বলছে, স্ট্রোকে আক্রান্তদের ২৩ শতাংশই জাঙ্ক ফুডে আসক্ত। এছাড়াও কোলেস্টেরল এইচডিএল কম থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে প্রায় ২৭ শতাংশ। আমরা দেখে থাকি, প্রতি ১০০ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৩৬ জনই অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত।

তিনি আরও বলেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে বা লক্ষণ দেখা মাত্রই ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই আমরা চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা করতে পারব। বিশ্বব্যাপী ৮ কোটি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে গেলে ও অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে মস্তিষ্কের কোষগুলো মারা যেতে শুরু করে। একে স্ট্রোক বলা হয়। স্ট্রোক দুই প্রকার। একটিকে বলে ইসকেমিক স্ট্রোক। এক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে যায়। সাধারণত রক্তনালীর ভেতর জমাট বাঁধা রক্তপিণ্ড এ সমস্যা করে থাকে। মোট স্ট্রোকের ৮০ শতাংশই এ ধরনের স্ট্রোক।

অপরটি হলো হেমোরেজিক স্ট্রোক। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে এটি দেখা যায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক, ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. শফিকুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।

আগামী ২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। ‘না করলে সময় ক্ষেপন, স্ট্রোক হলেও বাঁচবে জীবন’- শ্লোগানকে সামনে রেখে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হবে।

পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর সাত লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে মারা যান এক লাখ ৬০ হাজার রোগী। আমেরিকানদের মৃত্যুর তৃতীয় কারণ স্ট্রোক। বাংলাদেশেও এই সংখ্যা কম নয়। স্ট্রোকে আক্রান্তদের দুই-তৃতীয়াংশই মারা যান বা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি।

টিআই/এমএইচএস