সু চির দলীয় কার্যালয়ে তল্লাশি, তছনছের অভিযোগ
মঙ্গলবার রাতে এরএলডি’র কার্যালয়ে অভিযান চালায় সামরিক বাহিনী/ছবি: সংগৃহীত
গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও সাবেক স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) প্রধান কার্যালয়ে ‘তল্লাশি অভিযান চালিয়ে কার্যত তছনছ করেছে’ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এনএলডি এই অভিযোগ করেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা দরজা ভেঙে জোরপূর্বক সু চির দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে। তবে ঘটনার সময় কার্যালয়ে এনএলডি’র কোনো কর্মী উপস্থিত ছিলেন না।
বিজ্ঞাপন
সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী টানা চতুর্থ দিনের মতো হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার রাতে সু চির দল এনএলডির কার্যালয়ে এই অভিযান চালানোর ঘটনা ঘটল। গত সপ্তাহে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন এনএলডি সরকারকে উৎখাত করে দেশটির সেনাবাহিনী। আটক করা হয় প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, অং সান সু চিসহ অনেককে। বিক্ষোভকারীরা সু চির মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত শনিবার থেকে আন্দোলন করছেন।
ফেসবুকে নিজস্ব পেইজে এনএলডি জানায়, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির প্রধান কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে কার্যত তছনছ করে দিয়েছে।’ দলটি অবশ্য এর বেশি কিছু জানায়নি।
বিজ্ঞাপন
বিবিসি জানিয়েছে, দেশব্যাপী চলমান কারফিউয়ের মধ্যেই এনএলডি কার্যালয়ে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে গত দুইদিন ধরে মিয়ানমারে রাত্রিকালীন কারফিউ চলছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন রাত আটটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত জারি থাকে কারফিউ।
এছাড়া বিক্ষোভ-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একসঙ্গে পাঁচ জন বা এর বেশি মানুষের জড়ো হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিধিনিষেধ না মানলে অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে এর আগে ঘোষণা প্রচার করে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।
এদিকে স্থানীয় গণমাধ্যম মিয়ানমার নাউ’র বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নিতে বুধবার ভোর থেকেই রাজধানী নেইপিদোর রাস্তায় নেমেছেন বিপুলসংখ্যক সরকারি চাকরিজীবী।
এর আগে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভ করায় মানুষকে ছত্রভঙ্গ করতে মঙ্গলবার জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। বাগো শহরে মঙ্গলবার সকালে বিশালসংখ্যক বিক্ষোভকারীর মুখোমুখি অবস্থান নেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
এছাড়া রাজধানী নেইপিদোতেও বিক্ষোভরত মানুষের ওপর কলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। এতে কয়েকজন আহত হন। মিয়ানমারের অন্য শহরগুলোতেও মঙ্গলবার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, বিক্ষোভ দমাতে জলকামান ব্যবহারের পাশাপাশি নেইপিদোতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। পরে ২৭ জনকে আটক করা হয়।
সূত্র: বিবিসি
টিএম