দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হবে আগামী দিনে: রুশ গোয়েন্দাপ্রধান
সের্গেই নারিসকিন, ছবি: বিবিসি
বিদেশি রাষ্ট্রসমূহে গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনাকারী রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এসভিআরের প্রধান নির্বাহী সের্গেই নারিসকিন বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে বর্তমানে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে উপস্থিত হয়েছে রাশিয়া।
ভবিষ্যতে বিশ্ববাসীর সামনে রাশিয়ার ভাবমূর্তি কেমন হবে, তা এই অভিযানের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
রাশিয়ার প্রধান দুই গোয়েন্দা সংস্থার নাম এফএসবি ও এসভিআর। এই দু’টি সংস্থার মধ্যে এফএসবি দেশের অভ্যন্তরে এবং এসভিআর বহির্বিশ্বে গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনা করে।
বুধবার রাজধানী মস্কোতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের এক অনুষ্ঠানে এসভিআর প্রধান সের্গেই নারিসকিন বলেন, ‘রাশিয়া বর্তমানে বাস্তবিক অর্থেই ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের সামনে উপস্থিত হয়েছে। (ইউক্রেনে অভিযানকে কেন্দ্র করে) আমাদের ভাগ্যে যা ঘটবে, তা ই ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে রাশিয়ার স্থান নির্ধারণ করবে।’
বিজ্ঞাপন
তবে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে রাশিয়া কখনও, কোনো অবস্থাতেই আপস করবে না উল্লেখ করে এই রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব হচ্ছে রুশ নগারিকদের সম্মান, তাদের নিশ্চয়তা। এটি আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত।’
‘তাই এই প্রশ্নে কখনও রাশিয়া পিছু হটেনি, ভবিষ্যতেও কোনো পরিস্থিতিতে পিছু হটবে না। কারণ, যদি এক্ষেত্রে আপস করা হয়, তাহলে রাশিয়া আর প্রকৃত রাশিয়া থাকবে না।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে মূলত দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ২০০৮ সালে কিয়েভ ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকে দু’দেশের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।
এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বাড়ে দ্বন্দ্বের তীব্রতা। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বুধবার ২১ তম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান। ইউক্রেনের ছোট-বড় প্রায় সব শহরে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ সেনাদের। ইতোমধ্যে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর খেরসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে রুশ বাহিনী।
সূত্র: বিবিসি
এসএমডব্লিউ