নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করিনি, দাবি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর
মিয়ানমারের ক্ষমতা কাঠামোয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী খুবই প্রভাবশালী
নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের কথা অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তারা এই দাবি করে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কোনো অভ্যুত্থান করেনি এবং নির্বাচিত কোনো সরকারকে উৎখাতও করা হয়নি। তাদের দাবি, ক্ষমতা কাঠামোয় সামরিক বাহিনীর অংশগ্রহণ ন্যায়সঙ্গত; কারণ, গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি। নতুন নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অঙ্গীকার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে জান্তা সরকারের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন বলেন, ‘নতুন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা এবং নির্বাচিত দলের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ায় আমাদের লক্ষ্য।’
নতুন নির্বাচন আযোজনের কথা বলা হলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সামরিক বাহিনী অবশ্য এখনও কোনো তারিখ ঘোষণা করেনি। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর সারা দেশে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে তারা।
বিজ্ঞাপন
চলতি মাসের প্রথম দিনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধমে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের প্রভাবশালী সেনাবাহিনী। আটক করা হয় প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, অং সান সু চিসহ অনেক শীর্ষ নেতাকে। এরপরই অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে নামে দেশটির সাধারণ মানুষ। তবে বিক্ষোভ দমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা জান্তা সরকার।
এদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদ এবং সাবেক স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রেলপথ অবরোধ করেছে বিক্ষোভকারীরা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় মাওলামাইন শহরে যাওয়ার রেলপথ অবরোধ করে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করা মানুষের সঙ্গে কঠোর আচরণ করা হলে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হতে পারে বলে দেশটির সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘ সতর্ক করার পর রেলপথ অবরোধের এই ঘটনা ঘটল।
রাজধানী নেইপিদো, বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির বড় শহরগুলোতে সামরিক যান ও সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি গত দুই ধরে রাত্রিকালীন ৮-১০ ঘণ্টা ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখার হচ্ছে। এরপরও বিক্ষোভে নেমেছেন মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। এছাড়া চিকিৎসক, শিক্ষক ও ব্যাংকারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ধর্মঘটে নেমেছেন। এর ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সরকারি বিভিন্ন কাজ-কর্মও।
সূত্র: রয়টার্স
টিএম