ছবি: এনডিটিভি

গণতন্ত্রহীনতা, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি ও ক্ষমতাবানদের স্বেচ্ছাচারিতার চরম রূপ ‘বানানা রিপাবলিকে’ রূপ নিচ্ছে পাকিস্তান। দেশটির বর্তমানে সরকারের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে করা এক টুইটবার্তায় এ মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

ইমরান খান বলেন, ‘পাকিস্তান বানানা রিপাবলিকে রূপ নিচ্ছে। বর্তমান সরকারের বর্বরতার সামনে সভ্য পৃথিবী স্তব্ধ। বিরোধীদের হুমকি দেওয়ার জন্য এখন নিরপরাধ লোকজনকে লক্ষ্যবস্তুতে করা হচ্ছে এবং গ্রেপ্তার করে বিনা বিচারে দিনের পর দিন কারাগারে রাখা হচ্ছে।’

মধ্য আমেরিকার হাইতি, গুয়াতেমালা ও ক্যারিবিয়ান সাগরের তীরবর্তী দরিদ্র দেশগুলোকে বলা হয় বানানা রিপাবলিক। বিপ্লব-প্রতিবিপ্লব, ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর দুর্নীতি, সামরিক অভ্যুত্থানের মতো ঘটনা এখানে নিয়মিত ঘটনা।

তবে ইমরান খানের এই ক্ষোভ তার ঘনিষ্ঠ সহকারী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের জ্যেষ্ঠ নেতা শাহবাজ গিলের গ্রেপ্তারের ঘটনায়। গত ৯ আগস্ট পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এআরআই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গিল মন্তব্য করেছিলেন, গত এপ্রিলে পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে ইমরান খানের হেরে যাওয়া ও প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর জন্য দায়ী দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্ব।

তার কয়েক ঘণ্টা পর ১০ আগস্ট ভোরবেলায় ইসলামাবাদের অভিযাত এলাকা বানিগালার বাসভবন থেকে গিলকে আটক করে সাদা পোষাকের পুলিশ। পরে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়, সেই টিভি চ্যানেলটির সম্প্রচারও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী যে মামলায় শাহাবাজ গিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা জামিন অযোগ্য। বুধবার পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে গিলকে দুই দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

তবে গ্রেপ্তারের পর থেকেই ইমরান খানের দল পিটিআই অভিযোগ জানিয়ে আসছে— কারাগারে তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। পাকিস্তানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে বলেও অভিযোগ দলটির।

বুধবারের টুইটবার্তাতেও সেই ইঙ্গিত দেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি বর্তমান সরকারের নেতা নওয়াজ শরিফ, মরিয়ম নওয়াজ, মোল্লা ফজলুর রহমান, আসিফ আলি জারদারি, যারা প্রতিনিয়ত বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের (সেনাবাহিনী) বিরুদ্ধে মন্তব্য করে যাচ্ছেন, অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’

সূত্র: এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল

এসএমডব্লিউ