গোতাবায়া রাজাপাকসে

ব্যাপক জনবিক্ষোভের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এখন নিজের স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান। এজন্য গ্রিন কার্ড পেতে তৎপরতাও শুরু করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার জাতীয় দৈনিক ডেইলি মিরর এক প্রতিবদেনে জানিয়েছে এ তথ্য। দেশটির সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোতাবায়ার আইনজীবীরা ইতোমধ্যে গ্রিনকার্ডের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

বর্তমানে স্ত্রীসহ থাইল্যান্ডের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন গোতাবায়া। দেশটিতে চলতি নভেম্বর পর্যন্ত থাকার পরিকল্পনা করলেও পরে তা বাতিল করে শ্রীলঙ্কায় ফিরবেন বলে ঠিক করেছেন তিনি। আগামী ২৫ আগস্ট শ্রীলঙ্কায় ফেরার কথা রয়েছে তার।

সরকারি সূত্র বলেছে, গত মাস থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে গোতাবায়া রাজাপক্ষের আইনজীবীরা তার গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু করেন। গোতাবায়ার স্ত্রী আইয়োমা রাজাপক্ষে মার্কিন নাগরিক। স্ত্রীর সূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করার যোগ্যতা রয়েছে তার।

গোতাবায়ার নিজেরও একসময় মার্কিন নাগরিকত্ব ছিল; কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করার আগে সেই নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন তিনি। কারণ, দেশটির আইনে দুই দেশের নাগরিকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর অনুমতি নেই।

মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দিন আগে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনার পর এ মাসের শেষ দিকে শ্রীলঙ্কা ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। আরও বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডে গিয়ে তিনি মুক্তভাবে ঘোরার আশা করেছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তা উদ্বেগ দেখিয়ে থাইল্যান্ড সরকার তাকে বাইরে যেতে নিষেধ করেছে।

তার নিরাপত্তার জন্য থাইল্যান্ড পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ব্যুরোর নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সাদাপোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা গোতাবায়াকে হোটেলের মধ্যেই থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রত্যাশা অনুযায়ী পরিস্থিতি না থাকায় গোতাবায়া তার থাইল্যান্ডে থাকার পরিকল্পনা বদল করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কায় ফিরলে গোতাবায়াকে সরকারি বাসভবন ও নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে রনিল বিক্রমাসিংহের মন্ত্রিসভা। গত মাসে তীব্র বিক্ষোভের মুখে রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে প্রথমে মালদ্বীপ যান। সেখান থেকে পরে তিনি মেডিকেল ভিসা নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান। দুবার তাঁর ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর সিঙ্গাপুর আর তাঁর ভিসার মেয়াদ না বাড়ানোয় সস্ত্রীক থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেন গোতাবায়া। তৃতীয় কোনো গন্তব্য নির্ধারণ না করা পর্যন্ত সেখানে তাঁর থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।