যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে টেক্সাস ও মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেওয়ার তীব্র নিন্দা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি এটিকে ‘আদিম চিন্তাভাবনা’ বলেও অভিহিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোতে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত বিভিন্ন বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের হিড়িক পড়েছে। বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের নিয়ম বাতিলসহ ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরায় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেক্সাসসহ দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য। এরপরই সেসব সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহারের যে নিয়ম এতোদিন চালু ছিল, আগামী সপ্তাহ থেকে তা প্রত্যাহারের বিষয়ে গত মঙ্গলবার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। এছাড়া আগামী সপ্তাহ থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পুরোদমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন তিনি।

আগামী ১০ মার্চ থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে। নতুন এই নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, অঙ্গরাজ্যের কোনো বাসিন্দা মাস্ক পরতে না চাইলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কারও জরিমানা বা শাস্তির আওতায় আনতে পারবে না। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে এতোদিন যেসব বিধিনিষেধ কার্যকর ছিল, সেগুলোও বাতিল করা হয়।

মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘টেক্সাসকে ১০০ ভাগ খুলে দেওয়ার এখনই সময়।’ এ বিষয়ে মঙ্গলবার একটি নির্বাহী আদেশও জারি করেছেন গ্রেগ অ্যাবট। এর মাধ্যমে মহামারির শুরুর দিকে আরোপিত বিভিন্ন বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় সময় বুধবার (৩ মার্চ) প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, আমি মনে করি, এটা অনেক বড় একটি ভুল সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন কর্মসূচি চলছে; কিন্তু এরপরও মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ মেনে চলা এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৮৭ লাখেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন পাঁচ লাখ ১৯ হাজার মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত সাত কোটি ৮০ লাখ ডোজ করোনা টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মতে, স্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক বিধিনিষেধগুলো শিথিল বা বন্ধ করতে এটা কোনো কারণ হতে পারে না।

এদিকে করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এটা দেশের টিকাদান কর্মসূচিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরিচালক রচেল ওয়ালেনস্কি বলেছেন, ‘(করোনা সংক্রান্ত) সকল বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সময় এখনও আসেনি। করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে- অর্থাৎ ভালো হবে নাকি খারাপ; এটার জন্য আগামী এক বা দুই মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

সূত্র: বিবিসি

টিএম