ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ফরিদাবাদ জেলার ঘটনা। প্রসববেদনায় কাতর একটি গাভির পেট থেকে ৭১ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করেছেন একদল পশু চিকিৎসক। তবে অনেক চেষ্টার পরও গাভি ও তার বাচ্চাকে বাঁচানো যায়নি। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।

গত ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় গাভিটি আহত হয়। এ সময় গাভিটি গর্ভবতী ছিল। উদ্ধার করে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় ফরিদাবাদের অ্যানিমেল ট্রাস্ট। অবস্থার অবনতি দেখে দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসক।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি অস্ত্রোপচার করতেই চমকে ওঠেন চিকিৎসকরা। প্রায় ৪ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে গরুর পেট থেকে ৭১ কেজি প্লাস্টিক, পেরেক, কাচের টুকরো ও অন্যান্য বর্জ্য বের করেন তারা। তবে গাভি ও তার বাচ্চাকে বাঁচানোরও চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি।

ফরিদাবাদ অ্যানিমেল ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট রবি দুবে জানান, ‘গাভিটির পেট অস্বাভাবিক ফোলা ছিল। পেট বর্জ্যে পূর্ণ থাকায় বাছুরটির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। তাই আমরা আগেই প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু বাছুরটির তিন দিন পর গাভিটিও মারা যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমার ১৩ বছরের অভিজ্ঞতায় কোনো পশুর পেট থেকে এত পরিমাণ বর্জ্য অপসারণের ঘটনা এটাই প্রথম।’

ভারতে প্লাস্টিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে অনেক জায়গায়। কিন্তু তারপরও প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহার কমেনি। যার ফলে সামুদ্রিক জীব থেকে রাস্তার পশুরাও এর শিকার হচ্ছে। প্রাণহানি ঘটছে। এ নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশবিদ ও পশুবিদরাও। 

প্লাস্টিক খেয়ে প্রতি বছর কত গরু মারা যায় ভারতে, তার সরকারি হিসেব না থাকলেও এক পশুকল্যাণ সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, শুধু ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের লক্ষ্মৌতেই প্রতি বছর প্লাস্টিক খেয়ে এক হাজার গরুর মৃত্যু হয়।

গোটা দেশে যখন গো-রক্ষা নিয়ে আওয়াজ তুলছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো, গরুদের সুরক্ষা নিয়ে যখন মোদি সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিচ্ছে তখন, প্লাস্টিকের কারণে গরু মৃত্যুর ঘটনায় সেই সুরক্ষাবিধি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে এখন।

এএস