দাঁতের ক্ষয়, মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং ওরাল ক্যানসারের মতো বিভিন্ন ধরনের রোগে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ ভুগছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থার নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে মুখের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পরিষ্কার বৈষম্যের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, এই বৈষম্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ভয়ানকভাবে প্রভাবিত করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে মুখের স্বাস্থ্যের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত রয়েছে। তবে মুখের অনেক রোগ শুরুতেই প্রতিরোধ এবং কার্যকর ব্যয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থা দেখেছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ বা প্রায় ৩৫০ কোটি মানুষ দাঁতের ক্ষয়, মাড়ির রোগ এবং অন্যান্য অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

ডব্লিউএইচওর এই প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো ১৯৪টি দেশের মানুষের মুখের রোগের ব্যাপক চিত্র পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে। গত ৩০ বছরে বিশ্বজুড়ে মুখের বিভিন্ন ধরনের রোগে ভোগা মানুষের সংখ্যা ১০০ কোটি বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ডব্লিউএইচও বলেছে, অনেক মানুষের মুখের রোগ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ নেই বলেও পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। দাঁতের ক্ষয়, মাড়ির গুরুতর অসুস্থতা, দাঁত হারানো এবং মুখের ক্যানসারের মতো রোগগুলো মানুষের মুখের সবচেয়ে সাধারণ রোগ বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক এই স্বাস্থ্য সংস্থা।

তবে মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি পাওয়া গেছে, সেটি হলো দাঁতের ক্ষয়রোগ। বিশ্বের প্রায় আড়াইশ’ কোটি মানুষ এই রোগে ভুগছেন। আর গুরুতর মাড়ির রোগ; যা সব দাঁতের ক্ষতির প্রধান একটি কারণ। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের প্রায় একশ’ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত।

ডব্লিউএইচও বলেছে, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ নতুন করে ওরাল ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘ সুপারিশ পেশ করেছে। এতে দেশগুলোর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় মুখের স্বাস্থ্যসেবাকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস