ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করেছে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় আল জাজিরা মামলা দায়েরের এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত মে মাসে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানের সময় গুলিতে মারা যান আল জাজিরার প্রতিনিধি শিরিন আবু আকলেহ। টুইটারে আল জাজিরা বলেছে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের টেলিভিশন নিউজ নেটওয়ার্কের আইনি দলের তদন্তের পর মামলাটি করা হয়েছে।

কাতার-ভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রবীণ ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ দাখিল করেছে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক।

আবু আকলেহ গত ২৫ বছর ধরে আল জাজিরার টেলিভিশন সংবাদদাতা হিসাবে কর্মরত ছিলেন। আল জাজিরা বলছে, গত ১১ মে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনের একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানের সংবাদ সংগ্রহের সময় গুলিতে মারা যান তিনি।

৫১ বছর বয়সী আবু আকলেহ জেরুজালেমের বাসিন্দা এবং মার্কিন নাগরিক ছিলেন। ইসরায়েলি দখলদারিত্বের সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের কাছে ব্যাপক সম্মানিত হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ছয় মাস ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান, ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্ন ধরনের নতুন আলামত নিয়ে তৈরি একটি তথ্যপঞ্জি আইসিসির কাছে দাখিল করেছে আল জাজিরা।

এই টেলিভিশন নেটওয়ার্কের গাজা অফিসে গত বছরের ১৫ মে বোমা হামলার মতো ঘটনার উল্লেখ করে আইসিসির কাছে দাখিল করা অনুরোধে ‘আল জাজিরা ও ফিলিস্তিনের সাংবাদিকদের ওপর ব্যাপক হামলার প্রেক্ষাপটে’ উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলজাজিরার আইনজীবী রডনি ডিক্সন কেসি।

তিনি বলেন, আবু আকলেহ হত্যাকাণ্ড বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়। এটি এমন এক হত্যাকাণ্ড যা ব্যাপক পরিকল্পনার অংশ। এই হত্যার ঘটনায় দায়ীদের শনাক্ত এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য আদালতের তদন্ত করা উচিত।

‘এই মামলাটি শিরিনকে এবং এই বিশেষ হত্যা, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যে প্রমাণ উপস্থাপন করেছি, তাতে আল জাজিরার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে সব ধরনের কর্মকাণ্ড করতে দেখা যায়। কারণ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থা হিসাবে আল জাজিরাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।’

ডিক্সন বলেন, এবং তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, (ইসরায়েলি) কর্তৃপক্ষ এই টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এসএস