বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে। ওই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মন্তব্য করেন, ‘অমর্ত্য সেন নোবেল লরিয়েট নয়, উনি নোবেল প্রাইজ পাননি’।

বিশ্বভারতীর উপাচার্যের এমন মন্তব্য শুনে হেসে ফেলেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, ‘আমার কিছু বলার নেই। এমনটা ভাবলে উনার চিন্তাশক্তি নিয়ে ভাবার কারণ আছে।’

অমর্ত্য সেন নোবেল প্রাইজ পাননি— এমন মন্তব্যের ব্যাখ্যায় বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘নোবেল প্রাইজের যে ডিড তৈরি হয়েছিল, সেখানে বলা আছে পাঁচ জনকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হবে। যে পাঁচটি বিষয়ে নোবেল দেওয়ার কথা, সেগুলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য আর বিশ্ব শান্তি। এর বাইরে আর কেউ নোবেল পাবেন না।’

১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পান বাঙালি অমর্ত্য সেন। উপাচার্য বলেন, ‘পরে সুইডেনের সেন্ট্রাল ব্যাংক এগিয়ে আসে। তাদের অর্থে একটি পুরস্কার চালু হয়। যার নাম ব্যাংক অব সুইডেন প্রাইজ ইন ইকনমিক সায়েন্স ইন মেমোরি অব আলফ্রেড নোবেল। সেটাকে নোবেল পুরস্কার বলা যাবে না।’

জমি দখল ইস্যুতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘অমর্ত্য সেন আদালতে যাচ্ছেন না, কারণ গেলেই হেরে যাবেন।’ বিষয়টি মীমাংসা করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন উপাচার্য।

বিশ্বভারতীর কাছ থেকে কয়েকদিন আগেই চিঠি পেয়েছেন অমর্ত্য সেন। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সেই বিষয়টি প্রকাশে আসে। চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রেখেছেন অমর্ত্য সেন। সেই জমি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়কে হস্তান্তরের অনুরোধ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আদালতে যাচ্ছি আমি বলিনি। আমি উপাচার্যকে আদালতে যেতে বলেছি। উপাচার্য কী বললেন, সে নিয়ে আমার মাথা ঘামানোর কারণ নেই।’

জানা গেছে, ১৯৪৩ সালে অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেনকে ১২৫ ডেসিমেল জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছিল। এই জমিতেই গড়ে উঠেছে অমর্ত্য সেনদের পারিবারিক বাড়ি ‘প্রতীচী’। ২০০৬ সালে অমর্ত্য সেনের আবেদনের ভিত্তিতে জমির লিজ তার নামে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু বিশ্বভারতীর দাবি, জমি মেপে দেখা যায়, পাশাপাশি দুটি লিজ দেওয়া জমির মাঝে বিশ্বভারতীর নিজস্ব ১৩ ডেসিমেল জমিও রয়েছে ‘প্রতীচী’র সীমানার ভেতরে। 

/এসএসএইচ/