ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত একটি ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে/ সংগৃহীত ছবি

তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে দেশ দুটির কর্তৃপক্ষ। তুরস্কে ২৮৪ আর সিরিয়ায় ২৩৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পে তুরস্কে মৃতের সংখ্যা ২৮৪ জন ছাড়িয়েছে। দেশটির মালটিয়া, সানলিউরফা, ওসমানিয়ে ও দিয়ারবাকির প্রদেশে ২৮৪ জন নিহত এবং ২ হাজার ৩২৩ জন আহত হয়েছেন।

আর সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে, আলেপ্পো, হামা, লাতাকিয়া ও টার্টাসে কমপক্ষে ২৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৬৩৯ জন।

সিরিয়ার মানবাধিকার নেটওয়ার্ক ও হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি স্থানীয় উৎসের বরাতে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, বাশারবিরোধী উত্তর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, ইদলিব, আলেপ্পো, হামা, লাতাকিয়া ও রাক্কা অঞ্চলে ভূমিকম্প শক্তিশালী আঘাত হেনেছে। বাশার আল আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোতে অন্তত ৪২ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

সীমান্তের উভয় পাশের একাধিক শহরে বিধ্বস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধানে নেমেছেন স্থানীয় উদ্ধারকর্মী ও বাসিন্দারা। তুরস্কের দিকে এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বড় শহর রয়েছে। এসব এলাকা লক্ষাধিক সিরীয় শরণার্থীর আবাসস্থল।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান টুইটারে বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। আশা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কম ক্ষতিসহ এই দুর্যোগটি কাটিয়ে উঠব।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোতে প্রবেশ না করার জন্য বাসিন্দাদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধার করাই আমাদের প্রথম কাজ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, সোমবার ভোরের দিকে পর পর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তুরস্কে। প্রথমটি হয়েছে ভোর ৪ টা ১৭ মিনিটে, সেটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। আর দ্বিতীয় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তার ১৫ মিনিট পর। সেটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্প দুটির উৎপত্তিস্থল। তুরস্ক ছাড়াও সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসে কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।

সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজিয়ানতেপ তুরস্কের অন্যতম শিল্পোৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই শহরটি ও তার আশপাশের এলাকায় বেশকিছু শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় তুরস্কের অন্যতম জনবসতিপূর্ণ শহর এই গাজিয়ানতেপ। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী হওয়ায় গাজিয়ানতেপে অনেক সিরীয় শরণার্থীও আছেন।

ওএফ