যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ব্যক্তিদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন বিষয়ক একটি সংস্থায় চাকরি নিয়েছেন ব্রিটেনের রাজ সিংহাসনের অন্যতম উত্তরাধিকারী প্রিন্স হ্যারি। ‘বেটারআপ’ নামের ওই সংস্থাটির ‘চিফ ইমপ্যাক্ট অফিসার’ হিসেবে কাজ করবেন তিনি। এক বিবৃতিতে প্রিন্স হ্যারি নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা বেটারআপের সদর দফতর সান ফ্রান্সিসকো শহরে। বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন, কর্মক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক এবং আন্তরিক পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটিই করে থাকে এই প্রতিষ্ঠানটি।

অবশ্য বেটারআপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালেক্সেই রবিশাক্স যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, হ্যারিকে সরাসরি সংস্থার কোনো কর্মী বা সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে না।

তার কাজ মূলত হবে কোম্পানির কৌশলগত সিদ্ধান্ত ও দাতব্য উদ্যোগগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া এবং সেগুলো ঠিকমতো চলছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা এবং কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে জনসমক্ষে কথা বলা।

বিবৃতিতে নিজের নতুন চাকরির বিষয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের এই সদস্য বলেন, ‘বেটারআপের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। যখন আমি প্রথম মি. রবিশাক্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম, তখনই মনে হয়েছিল পেশাজীবীদের মানসিক উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে তাদের আরো দক্ষ করে তোলার কাজটি তারা বেশ গুরুত্বসহকারে করে।’  

২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সানফ্রান্সিসকোয় প্রতিষ্ঠিত হয় পেশাজীবীদের কোচিং, কাউন্সিলিং এবং পরামর্শদানকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘বেটারআপ’। বিশ্বের ৬৬টি দেশে ৪৯টি ভাষায় সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে হ্যারি যে পদে নিয়োগ পেয়েছেন, সেটি অলাভজনক সহযোগিতা সংস্তাগুলোতে দেখা গেলেও কর্পোরেট বিশ্বের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘চিফ ইমপ্যাক্ট অফিসার’ পদটি বিরল।

যুক্তরাজ্য সেনাবাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে প্রিন্স হ্যারির। সেনা সদস্য হিসেবে আফগানিস্তান মিশনেও গিয়েছিলেন তিনি। তবে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যুতে বরাবরই আগ্রহ ছিল তার। সেনাবাহিনীতে থাকার সময়েও এ সম্পর্কিত বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

২০১৯ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন ৩৬ বছর বয়সী প্রিন্স হ্যারি এবং তার ৩৯ বছর বয়সী স্ত্রী মেগান মার্কেল। একটি পুত্রসন্তান রয়েছে এই দম্পতির ঘরে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এই দম্পতির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন হ্যারি-মেগান।

যুক্তরাজ্য ছাড়ার আগে এই দম্পতি অভিযোগ করেছিলেন, ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের প্রতি হিংসাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং মনগড়া সংবাদ পরিবেশনের জন্য ব্রিটেনের একাধিক পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন হ্যারি-মেগান।

ইতোমধ্যে এই দম্পতি জানিয়ে দিয়েছেন, তারা রাজপরিবারের আনুষ্ঠানিকতা থেকে দূরে থাকতে চান।

সূত্র: বিবিসি

এসএমডব্লিউ