সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের পারদ। প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। আগামী শনিবার প্রথম দফার ভোট হবে। তার আগে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচার যুদ্ধ।

তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিজেপিকে প্রধান প্রতিপক্ষ করে তুলেছে। বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে পদ্মফুল ফোটাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির।

হাত গুটিয়ে বসে নেই বাম-কংগ্রেস শিবিরও। ২০১৬ সালের মতো এবারও জোট বেঁধে লড়ছে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট। সেইসঙ্গে এবার তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে সংযুক্ত মোর্চা। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় মোট আসন ২৯৪। সরকার গঠনের জন্য দরকার ১৪৮ আসন।

কী হবে আসন্ন ভোটে? বিধানসভা কে দখল করবে? ফের কি মসনদ ধরে রাখতে সক্ষম হবে তৃণমূল কংগ্রেস? না কি এবার ক্ষমতায় আসবে বিজেপি? এমন নানা প্রশ্নে রাজ্যের বাসিন্দাদের মাঝে জরিপ পরিচালনা করেছে জরিপসংস্থা সিএনএক্স।

সিএনএক্সের তৃতীয় দফার এই জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে গত ১২ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত। ভোটারদের মুখোমুখি হয়ে, তাদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়।

বিধানসভা ভোটে রাজ্যের কোন দল কত শতাংশ ভোট পেতে পারে; প্রশ্নের জবাবে সিএনএক্সের তৃতীয় দফার এই জরিপে ৪০ শতাংশ ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়তে পারে বলে অংশগ্রহণকারীরা জানান। এছাড়া ভারতীয় জনতা পার্টি ৩৮ শতাংশ, বামদলগুলো ও কংগ্রেস ১৬ শতাংশ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল ৬ শতাংশ ভোট পেতে পারেন বলে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা মতামত দেন।

বিধানসভার ২৯৪টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য ১৪৮টির দরকার হয়। তবে এবারের নির্বাচনে কোন দল কতটি আসন পাবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জরিপে অংশ নেওয়া ভোটাররা তৃণমূল কংগ্রেস ১৩৬ থেকে ১৪৬, বিজেপি ১৩০ থেকে ১৪০, বাম ও কংগ্রেস ১৪ থেকে ১৮ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল ১ থেকে ৩টি আসনে জয়ী হতে পারে বলে জানান।

জরিপে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ইস্যু না কি শুধুই ধর্মীয় পরিচিতি, কিসের ভিত্তিতে বিধানসভায় ভোট দেবে সংখ্যালঘুরা? উত্তরে ৫৪ শতাংশই বলেছেন, ইস্যুর ভিত্তিতে ভোট দেবেন। ৪২ শতাংশ বলেছেন, ধর্মীয় পরিচিতির ভিত্তিতে। ৪ শতাংশ মন্তব্য করেননি।

এবারের নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তৃণমূল ছেড়ে আসা অনেক নেতাকে প্রার্থী করা হয়েছে। এতে বিজেপির লাভ হবে না বলে মনে করছেন জরিপে অংশগ্রহণকারী বিজেপি সমর্থকদের ৫৬ শতাংশই।

ভোটের মুখে তৃণমূল থেকে আসাদের প্রার্থী তালিকায় গুরুত্ব দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কি লাভ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ৫৬ শতাংশ বলছেন, না। মন্তব্য করার থেকে বিরত ছিলেন ১৯ শতাংশ।

বিধানসভা নির্বাচনে কি তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে পারবে আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ? এই প্রশ্নের জবাবে ৪৭ শতাংশ মনে করছেন, পারবে। ৩৬ শতাংশ মনে করছেন পারবে না। ১৭ শতাংশ মন্তব্য করেননি।

আব্বাস সিদ্দিকির দলকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। অন্যদিকে, সিদ্দিকি তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অভিযোগ করেছেন। জরিপের ফল অনুযায়ী, সিদ্দিকির দাবি উড়িয়েছেন ৬৪ শতাংশ। ১৭ শতাংশ সিদ্দিকির দাবি সঠিক বলে মনে করেন।

সূত্র: এবিপি আনন্দ।

এসএস