টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (ফাইল ছবি)

ইরানের ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। অবশ্য মস্কোকে অস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি প্রথম দিকে অস্বীকার করলেও গত বছর তা স্বীকার করে নেয় ইরান। আর এরই ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ এই মিত্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়েছে ইউক্রেনীয় পার্লামেন্ট।

সোমবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিয়েভের পার্লামেন্ট সোমবার রাশিয়ার মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে একটি নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। মূলত ইউক্রেনে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া এবং দীর্ঘ এই সময় ধরে মস্কোতে অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে।

গত রোববার রাতের আঁধারে কিয়েভে ব্যাপক হামলা চালায় রাশিয়া। ওই হামলাকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কিয়েভে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। ব্যাপক ওই হামলায় একজন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হন।

রয়টার্স বলছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রোববার রাজধানী কিয়েভে চালানো সবচেয়ে বড় ওই হামলায় রাশিয়া ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগ সামনে আনার একদিন পর সোমবার নিষেধাজ্ঞার ওই প্যাকেজটি অনুমোদন করে ইউক্রেনীয় পার্লামেন্ট।

ইউক্রেনের পার্লামেন্ট তার ওয়েবসাইটে বলেছে, ‘বিশ্বের সভ্য দেশগুলোর ক্রিয়াকলাপের সাথে তালমিলিয়ে ইরানকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করতে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞাগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

প্যাকেজটিতে ইরানের সঙ্গে সামরিক ও দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একইসঙ্গে ইরানের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক সুবিধা পাওয়ার বিষয়টিও স্থগিত রাখা এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এএফপি বলছে, পার্লামেন্টে অনুমোদনের পর এটিকে আইনে পরিণত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বাক্ষর করতে হবে। তবে এটি কেবলই আনুষ্ঠানিকতা কারণ ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট নিজেই বিলটি পার্লামেন্টে জমা দিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি গত সপ্তাহে ইরানি নাগরিকদের কাছে সরাসরি আবেদন রেখে জিজ্ঞাসা করেছিলেন: ‘কেন আপনারা রাশিয়ান সন্ত্রাসের সহযোগী হতে চান?’

জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক গত রোববার বলেছেন, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ইরানের তৈরি ডজন ডজন শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে হামলা করা হয়েছে। সেসময় ইরানকে তিনি ‘সন্ত্রাসী সরকার’ বলেও অভিহিত করেন।

পোদোলিয়াক টুইটারে বলেন, ‘তেহরান এই যুদ্ধে মস্কোর একটি প্রধান মিত্র হয়ে উঠেছে এবং বেসামরিক শহরগুলোতে আক্রমণের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করছে।’

অবশ্য তেহরান পাল্টা সমালোচনা করে বলেছে, পশ্চিমা সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য জেলেনস্কি যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন এই ধরনের অভিযোগ আসলে সেটিরই অংশ।

টিএম