রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ফাইল ছবি)

ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রায় ৪৭টি দেশের শীর্ষ নেতা মলদোভায় মিলিত হয়ে কৌশলগত হুমকি নিয়ে আলোচনা করবেন। মলদোভা ও ইউক্রেনের প্রতি তাদের সংহতির বার্তাও মস্কোর জন্য স্বস্তির হবে না।

গত বছর ইউক্রেনে হামলার ‘অজুহাত’ হিসেবে রাশিয়া নিজের সীমানার দোরগোড়ায় পশ্চিমা বিশ্বের বেড়ে চলা প্রভাব তুলে ধরেছিল। বিশেষ করে সামরিক জোট ন্যাটোর থাবা থমকে দিতে ইউক্রেনের ওপর নিয়ন্ত্রণ জরুরি বলে যুক্তি দিয়েছিল রাশিয়ার নেতৃত্ব।

অথচ বাস্তবে ইউক্রেনসহ রাশিয়ার সীমান্তের কাছের একাধিক দেশ বেশ কয়েক বছর ধরে ইইউ ও ন্যাটোর কাছে ‘অবহেলিত’ থেকেছে। এই দুই জোটে যোগদানের কোনও বাস্তব সম্ভাবনার আশ্বাস পায়নি ইউক্রেন, জর্জিয়া, মলদোভা ইত্যাদি দেশ।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা সেই বাস্তবতা বদলে দিচ্ছে। বহু বছরের ‘অবহেলা’ ঝেড়ে ফেলে পশ্চিমা বিশ্ব এবার সত্যি রাশিয়ার থাবা থেকে প্রতিবেশীদের মুক্ত রাখতে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। মলদোভার রাজধানী চিসিনাউয়ের উপকণ্ঠে আগামী বৃহস্পতিবার ইউরোপের প্রায় ৪৭টি দেশের শীর্ষ নেতা মিলিত হয়ে রাশিয়াকে সেই বার্তা দিতে চলেছেন।

ইউরোপীয় রাজনৈতিক সংঘ – ইপিসি’র দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য যথেষ্ট সময় না থাকলেও এর মাধ্যমে ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়ায় মলদোভার প্রতি সমর্থন যথেষ্ট স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

শীর্ষ সম্মেলনের আগেই ইইউ নেতারা ছোট ভিডিও পোস্ট করছেন। সেখানে হ্যাশট্যাগ হিসেবে ‘মলদোভা নট অ্যালোন’ ব্যবহার করা হচ্ছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এই সম্মেলনকে রাশিয়ার ‘উপনিশেবাদ’-এর বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

প্রতিবেশী ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা এবং মলদোভার নিজস্ব ভূখণ্ডে রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রয়াস সে দেশের দুশ্চিন্তার কারণ। এমনকি ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার স্বঘোষিত ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীও’ মোতায়েন রয়েছে।

পশ্চিমা বিশ্বের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্ডু নিজের দেশ ও সরকারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ইউরোপের আরও সহায়তার আবেদন করে চলেছেন। তার আশা, ইপিসি’র শীর্ষ সম্মেলন সেই সংহতির বার্তা দেবে।

মাত্র ২৬ লাখ জনসংখ্যার এই রাষ্ট্রে এই প্রথম এত বড় আকারের শীর্ষ সম্মেলন মস্কোর কাছে অস্বস্তিকর হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোর বাইরের এই বৃহত্তর রাষ্ট্রীয় জোট সাধারণ কৌশলগত হুমকি নিয়ে আলোচনার মঞ্চ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।

রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন ও মলদোভা ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছে। রাশিয়ার হামলা না ঘটলে সেই স্বীকৃতি পেতে আরও বিলম্ব হতো, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

তবে ইইউতে পৌঁছানোর পথে দুই দেশের সামনে এখনও অনেক বাধা রয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। মলদোভায় ইপিসি সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কিও সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেন।

এছাড়া দ্রুত ইইউতে যোগদানের আশা করলেও দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি।

টিএম