পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার আট দফা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৩০টি আসনে শনিবার (২৭ মার্চ) থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে প্রচুর নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন থাকলেও ভোট শান্তিপূর্ণ হলো না। রাজ্যজুড়ে ব্যাপক গণ্ডগোল দেখা দিয়েছে। বিজেপির এক কর্মী নিহত হয়েছেন। প্রার্থীর ওপর হামলা এবং নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগও উঠেছে।  

এদিন সকালেই কোশিয়ারিতে একজন বিজেপি কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পূর্ব মেদিনীপুরের দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্রে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই ও পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান সৌম্যেন্দু অধিকারীর গাড়ি ভাঙা হয়েছে। সৌম্যেন্দুর অভিযোগ, তৃণমূল জালিয়াতি করছে শুনে তিনি এসেছিলেন। তারপরই তার ওপর হামলা করা হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি ওখানে কারচুপি করেছে।

হামলা হয়েছে বাম নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত মোর্চা প্রার্থী সুশান্ত ঘোষের ওপরও। সেখানেও অভিযুক্ত রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। পুরুলিয়ায় তৃণমূলের এক প্রার্থীকে টিভি ক্যামেরার সামনেই বিরোধীদের হুমকি দিতে দেখা গেছে। তিনি বলেছেন, গুলি মেরে দেব। নির্বাচন কমিশন ঘটনার অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়েছে।

আবার খেজুরিতে সংঘর্ষে এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর মাথা ফেটেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি এই কাজ করেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি জায়গায় একই অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পূর্ব মেদিনীপুর শুভেন্দু অধিকারীর শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত।

এদিন সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছিল পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। সকাল থেকেই তৃণমূল অভিযোগ করে যে, প্রচুর বাইরের লোক ঢুকিয়েছে বিজেপি। তাদের বুথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা সমানে ছাপ্পা ভোট দিয়ে যাচ্ছে। দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতারা নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়েও নালিশ জানায়।

পটাশপুরে তো সারারাত ধরে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। প্রবল বোমাবাজি হয়েছে। প্রধান দুই দলের সংঘর্ষে পটাশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছাড়াও দুই পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন।

বিজেপি আবার দাবি করেছে, তৃণমূল কংগ্রেস বুথে কর্মী ঢুকিয়ে ছাপ্পা ভোট মারার চেষ্টা করেছে। দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্রের একটি বুথে অভিযোগ ওঠে, ইভিএমে বোতাম টিপলেই ভোট পদ্মে গিয়ে পড়ছে। এ নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। প্রতিবাদ ও তর্ক-বিতর্কের পর ভিভিপ্যাট মেশিন বদল করে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়।

তবে গোলমাল সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে প্রথম ধাপে ভোট পড়ার হার বেশ ভালোই। বেলা এগারোটার মধ্যেই ৩৬ শতাংশ ভোট পড়ে। আর বেলা ২টা পর্যন্ত ৫৪ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।

এএস