স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী। আর এই অবৈধ সম্পর্কের জেরে স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। সোমবার (২৯ মার্চ) সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলির চুঁচুড়া চকবাজার এলাকায়।

আত্মহত্যা করা ওই স্বামীর নাম রাজু মালিক (৪৫)। অন্যদিকে, গুরুতর আহত স্ত্রী রিঙ্কু মালিক বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহত রিঙ্কুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ দুই বছর ধরে স্থানীয় বিবাহিতা এক নারীর সঙ্গে রাজুর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। স্বামীর সেই অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করেছিলেন রিঙ্কু। এরপরই স্ত্রীর ওপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করে রাজু।

অনেক বোঝানোর পর কোনো কাজ হয়নি। দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে নিজের বাপের বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন রিঙ্কু। এরপর থেকেই রাজু তাকে রাস্তাঘাটে নানাভাবে হেনস্থা করথে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আর্থিক অনটনের কারণে সংসার চালানোর জন্য বাধ্য হয়ে রিঙ্কু একটি রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে কাজ করা শুরু করেন। সোমবার সকাল ১১টার দিকে শ্বশুরবাড়ি চুঁচুড়ার শান্তিপল্লী এলাকায় এক রোগীর রক্ত সংগ্রহ করতে যাওয়ার কথা ছিল রিঙ্কুর। সেইমতো রিঙ্কু যান রক্ত সংগ্রহ করতে। অন্যদিকে নিজের এলাকায় স্ত্রীর আসার খবর পেয়ে ধারাল অস্ত্র নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে স্বামী রাজু।

রোগীর বাড়ি থেকে রক্ত সংগ্রহ করে বের হতেই রাজু ধারাল অস্ত্র নিয়ে স্ত্রীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারপর এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায় সে। ঘটনাস্থল থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রিঙ্কুকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। তার শরীরের বিভিন্ন ক্ষতে ১২৬টি সেলাই লেগেছে।

অন্যদিকে, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে নিজের বাড়িতে গিয়ে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে রাজু। মৃত রাজুর মেয়ে জানিয়েছে, স্থানীয় এক বিবাহিতা নারীর সঙ্গে তার বাবার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সম্পর্ক জানাজানি হওয়ার পর বারণ করা সত্ত্বেও কথা শুনতেন না বাবা।

এরপর মা তার নানুর বাড়িতে চলে যায়। কিছুদিন পর মাকে বুঝিয়ে ফের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে বাবা। কিন্তু সমান্তরালভাবে ওই বিবাহিতা নারীর সঙ্গে সম্পর্কও চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এরপরই মা কয়েক মাস আগে পাকাপাকিভাবে বাপের বাড়িতে চলে যায়।

মেয়ের অভিযোগ, এরপর থেকেই তার বাবা রাস্তাঘাটে তার মাকে নানারকমভাবে হেনস্থা করত। তারপরই এদিনের ঘটনা। অভিযুক্ত বিবাহিতা নারীর কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।

এদিকে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চুঁচুড়া থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ জানালে পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করবে। মৃতের মেয়ে জানান, তিনি ওই নারীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।

টিএম