চীনের মূল ভূখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬ জনের দেহে মহামারি করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে; যা তার আগের দিনের তুলনায় নয় জন বেশি। শনিবার দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। অবশ্য দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এর সঙ্গে মিয়ানমারে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবকে মেলাচ্ছেন।   

চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, নতুন করে যেসব মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে সাত জন ইউনান প্রদেশের। তারা সবাই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত। সেখানে মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া শহর রুইলিতে একটি গুচ্ছ সংক্রমণ (কোভিড-১৯ ক্লাস্টার) শনাক্ত হয়েছে। সেখান থেকে সংক্রমণের বিস্তার ঘটতে পারে।  

রুইলি শহরের ওই আক্রান্তদের জিনতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে (জেনেটিক অ্যানালাইসিস) দেখা যাচ্ছে, মিয়ানমার থেকেই তাদের দেহে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটেছে এবং চীনে সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে যেসব মানুষের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে তার সঙ্গে এর মিল নেই। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরটিতে গণহারে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনের সঙ্গে এখান থেকে বের হয়ে অন্য কোথাও যাওয়ার ওপর আরোপ হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। 

রুইলি হলো ইউনান প্রদেশের অন্যতম ট্রানজিট পয়েন্ট। এর সঙ্গে লাওস, মিয়ানমার এবং ভিয়েতনামের চার হাজার কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে। এসব সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে মানুষজন চীনে ঢোকার চেষ্টা করেন। বিশেষ করে গত বছর করোনার প্রকোপ শুরুর পর চীন ‘নিরাপদ’ হয়ে উঠলে এসব মানুষের ঢল নামে। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরটিতে গণহারে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনের সঙ্গে এখান থেকে বের হয়ে অন্য কোথাও যাওয়ার ওপর আরোপ হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। শনিবার পর্যন্ত শহরটিতে ৩ হাজার ৬৫০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে যারা আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেছিলেন। এরপর তাদের ঘরবন্দি করে রেখে বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।  

ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, ওই সাত জন ছাড়া চীনের মূল ভূখণ্ডে গতদিন আরও যে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তাদের সবাই বাইরের দেশ থেকে সংক্রমিত (ইমপোর্টেড) হয়েছেন। এছাড়া উপসর্গবিহীন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৪ জন। চীন অবশ্য তাদের শনাক্ত করোনা রোগীর তালিকায় উপসর্গ ছাড়া করোনায় আক্রান্তদের নথিভুক্ত করে না। 

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এই চীন থেকে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গোটা বিশ্বে বিস্তার ছড়িয়েছিল করোনা। এরপর তা বৈশ্বিক মহামারির রুপ নেয়। তবে দেশটির ভাইরাসটির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সফল হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত ৯০ হাজার ২৫২ রোগীর মধ্যে ৪ হাজার ৬৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

এএস