কনটেইনারবাহী দৈত্যাকার জাহাজ এভার গিভেনের কারণে সুয়েজ খালে আটকা ৪২২টি জাহাজের সর্বশেষটি শনিবার এই খাল পেরিয়ে গেছে। শনিবার সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ (এসসিএ) বলছে, সুয়েজ খালে জাহাজ জটে আটকা সর্বশেষ জাহাজটিও শনিবার মুক্ত হয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। 

এসসিএর চেয়ারম্যান ওসামা রাবি বলেছেন, শনিবার খালের উভয় প্রান্ত থেকে ৮৫টি জাহাজ ছেড়ে গেছে। সুয়েজে যে ৪২২টি জাহাজ জটে আটকা পড়েছিল; সেগুলো গত সোমবার এভার গিভেন মুক্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে খাল ছাড়তে শুরু করে। 

গত ২৩ মার্চ সকালে ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্যের দৈত্যাকার এভার গিভেন যখন সুয়েজ খাল ধরে এগোচ্ছিল, তখন প্রবল ধূলিঝড় আর প্রবল বাতাসে জাহাজটির অভিমুখ বেঁকে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায় এবং সেটি খালকে আড়াআড়িভাবে আটকে দেয়। এর পরিণতিতে ৪২২টি মালবাহী জাহাজ খালের দু’দিকে আটকে পড়ে। প্রায় সোয়া দুই লাখ হাজার টন ওজনের জাহাজটি ১৮ হাজার ৩০০ কনটেইনার নিয়ে আটকা পড়েছিল।

সেই সময় বহু জাহাজকে কেপ টাউন হয়ে পুরো আফ্রিকা ঘুরে ইউরোপের দিকে পাড়ি দিতে হয়। বিশেষজ্ঞ উদ্ধারকারীদের একটি দল প্রায় এক সপ্তাহের চেষ্টায় গত সোমবার এভার গিভেনকে মুক্ত করেন। সুয়েজে খালে কী কারণে জাহাজটি আটকা পড়েছিল তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসসিএর চেয়ারম্যান ওসামা রাবি।

চলতি সপ্তাহে খাল পরিদর্শনে গিয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, আমরা বিশ্বকে একটি দৃঢ় বার্তা দিতে চাই যে, সুয়েজ খাল... বিশ্ব বাণিজ্যের পণ্য পরিবহন করতে পারেন।

তবে এই খালের পাশে দক্ষিণের দিকের দ্বিতীয় চ্যানেলটি পুনরায় চালু করা হবে কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়। ২০১৫ সালে মিসর ৭০ কিলোমিটারের ওই জলপথ ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে তৈরি করে মিসর। চ্যানেলটি পুনরায় চালু করা হলে সুয়েজে জাহাজ আটকে গেলেও জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে না। আল-সিসি বলেন, দক্ষিণের চ্যানেলটির সম্প্রসারণের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। 

মিসরের সুয়েজ অঞ্চলে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরকে যুক্ত করে প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি খনন করা হয়। ১৮৫৯ সালের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় খালটির খননকাজ।

১০ বছর পর ১৮৬৯ সালের ১৭ নভেম্বর নৌ-চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় সুয়েজ খাল। এই খালের আয় দিয়ে মিসরের জাতীয় বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ অর্থের যোগান দেয়া হয়।

এসএস