পরমাণু সমঝোতা ইস্যুতে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরান ও পরাশক্তি দেশগুলোর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় মূলত সেটা নির্ধারণ করতেই মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে এই বৈঠককে গঠনমূলক বলে বর্ণনা করেছে তেহরান।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভিয়েনার ইম্পেরিয়াল ও গ্রান্ড হোটেলে ইরান, চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে অংশ নেন।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব পরাশক্তির মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান।

বৈঠকের পর ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরকচি মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্লান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত পরমাণু সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো আলোচনা চালিয়ে যাবে।

ভিয়েনায় ইরানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আরাকচি। ইরানের প্রেস টিভিকে তিনি বলেন, ‘ভিয়েনা আলোচনা গঠনমূলক হয়েছে...। পরবর্তী বৈঠক আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে।’

আব্বাস আরাকচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া পরমাণু সমঝোতার সকল পক্ষই এ বৈঠকে উপস্থিত রয়েছে। তিনি বলেন, পরমাণু সমঝোতার যৌথ কমিশনসহ যে কোনো বৈঠকে যদি ইরান উপস্থিত থাকে তাহলে সেখানে যুক্তরাষ্ট্র উপস্থিত থাকতে পারবে না এবং এটাই ইরানের চূড়ান্ত নীতি।

এদিকে বৈঠকে অংশ নেওয়া রুশ প্রতিনিধি মিখাইল উলিয়ানভ টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় এই বৈঠককে ‘সফল’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘জেসিপিওএ হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে না। কিছুটা সময় লাগবে। তবে কত সময় লাগবে; কেউই জানে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যৌথ কমিশনের আজকের বৈঠকের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- আমাদের লক্ষ্য অর্জনে বাস্তবিক অর্থেই কাজ শুরু হয়েছে।’

এদিকে ইরানবিষয়ক বিশেষ দূত রবার্ট ম্যালের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল ভিয়েনায় উপস্থিত থাকলেও আলোচনায় অংশ নেয়নি। কারণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান সরাসরি আলোচনায় বসবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল।

তবে ইরান ও পরাশক্তি দেশগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত মঙ্গলবারের এই বৈঠককে ‘গঠনমূলক’ বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটনও। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ‘আমরা এই বৈঠককে গঠনমূলক বলে মনে করছি। একইসঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই।’

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম