ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে করোনা টিকার ঘাটতি চলছে। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে এই ঘাটতির পরিমান মোট এক কোটি ডোজ।

টিকার ঘাটতি নিয়ে সম্প্রতি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলার মধ্যেই বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি এ ও বলা হয়েছে, যে ‍রাজ্যগুলোতে ঘাটতির পরিমান বেশি, সেগুলোতে আগামী ৩ দিনের মধ্যে ২০ লাখ ডোজ করোনা টিকা সরবরাহ করবে কেন্দ্র।

গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে করোনা গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকা দেওয়া হচ্ছে ৪৫ এবং তার অধিক বয়সী নাগরিকদের।

দেশটিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি এখনও চলমান আছে; এর মধ্যেই আগামী ১ মে থেকে রাজ্যগুলোকে তৃতীয় পর্যায়ের টিকাদান শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ পর্যায়ে দেশের ১৮ বছর ও তার অধিক বয়সীদের টিকার আওতায় আনা হবে।

ভারতের ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের করোনা টিকা কোভিশিল্ড, ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে দেশজুড়ে চলমান এই গণটিকাদান কর্মসূচিতে।

বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মূলত দুটি টিকার ডোজের সংকট চলছে বর্তমানে রাজ্যগুলোতে— কোভ্যাক্সিন ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোভিশিল্ডের ওপর চাপ পড়ছে বেশি।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব সত্যেন্দ্র জৈন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি টিকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে দিল্লিতে।

তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দিল্লিকে ৩৮ লাখ ডোজ করোনা টিকা সরবরাহ করা হয়েছে, আরো ৫ লাখ ডোজ টিকা চেয়ে কেন্দ্র বরাবর আবেদন করেছে দিল্লির রাজ্য সরকার।

ঘাটতির দিক দিয়ে দিল্লির পরই আছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র। সেখানকার অনেক টিকা কেন্দ্র বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রী রাজেশ টোপে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে থেকে পর্যাপ্ত টিকার ডোজ না আসায় আমরা এই টিকাকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি।’

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত ১৬ কোটি ১০ লাখ করোনা টিকার ডোজ ব্যাবহৃত হয়েছে; অর্থাৎ এ পর্যন্ত করোনা টিকার আওতায় আনা হয়েছে ৮ কোটি ৫ লাখ মানুষকে।

এসএমডব্লিউ