চীনের বৃহত্তম নভোযান ‘লংমার্চ ফাইভ বি’র যে ধ্বংসাবশেষটি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে, সেটি মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তানের কোনো এলাকায় পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে শনিবার (৮ মে) একথা জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম সিএনএন’র একজন রিপোর্টার।

এর আগে ধ্বংসাবশেষটি ইতালির জনবহুল কোনো এলাকায় পড়তে পারে বলে জানিয়েছিল দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। যার কারণে ইতোমধ্যেই ইতালির উমব্রিয়া, লাজিও, আবরুজ্জো, মোলিসে, ক্যাম্পানিয়া, ব্যাসিলিকাটা, পুগলিয়া, কালাব্রিয়া, সিসিলি ও সার্ডিনিয়া— এই দশ অঞ্চলে সতর্কতাও জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

তবে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র রিপোর্টার জিম স্কিউটো জানিয়েছেন, ‘লং মার্চ ফাইভ বি’ চীনা নভোযানের ধ্বংসাবশেষটি তুর্কমেনিস্তানের কোনো অংশে আছড়ে পড়তে পারে।

এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাইক হাওয়ার্ড জানিয়েছিলেন, চীনা রকেটটি ৮ মে নাগাদ পৃথিবীর কক্ষপথে ফিরে আসতে পারে। বিষয়টি মার্কিন সামরিক বাহিনীর স্পেস কমান্ড নজরদারি করেছ।

উল্লেখ্য, চীনা মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের জন্য ‘লং মার্চ ৫বি রকেট’টি গত ২৯ এপ্রিল উৎক্ষেপণ করা হয়। রকেটটিকে সফলভাবে তিয়ানহে স্পেস স্টেশনের মডিউলকে কক্ষপথে স্থাপন করা গেলেও পরে সেটির ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারায় গ্রাউন্ড স্টেশন। 

এরপর থেকেই পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে চলেছে চীনা রকেটটি। তবে, এর ভেতরের ১০০ ফুট লম্বা (৩০ মিটার) একটি অংশ রকেট থেকে আলাদা হয়ে ক্রমশ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ছে। সেটাই যেকোন সময় আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীতে।

চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিকর্ষ শক্তির টানে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ওই ধ্বংসাবশেষটি আসলে লংমার্চ ফাইভ বির ১০০ ফুট লম্বা একটি অভ্যন্তরীণ অংশ, যার ওজন প্রায় এক টন।

২০২০ সালের মে মাসে চীনের আর একটি নভোযানে একই ঘটনা ঘটেছিল। সেবার পশ্চিম আফ্রিকার আইভরি কোস্টে গ্রামীণ এলাকায় আছড়ে পড়েছিল ওই নভোযানটির ধ্বংসাবশেষ। বাতিল ওই ধ্বংসাবশেষে ৩৯ ফুট দীর্ঘ একটি ধাতব পাইপও ছিল। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

টিএম