হামাসের হামলার তীব্রতায় ইসরায়েল জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ কার্যত যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। বুধবার (১২ মে) সেই যুদ্ধ চলছে টানা পঞ্চম দিনের মতো। সোমবারের মতো মঙ্গলবারও দিনভর লড়াই হয়েছে। একের পর এক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। পাল্টা রকেট হামলা চালাচ্ছে হামাসও।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে এখন পর্যন্ত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জন শিশুও রয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের দাবি, গত পাঁচদিনে অন্তত পাঁচ জন ইসরায়েলির নিহত হয়েছে। নিহত হয়েছে এক ভারতীয় নারীও।
বিজ্ঞাপন
রোববার রাতে প্রথম রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। জবাবে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। মঙ্গলবার এই সংঘর্ষের মাত্রা আরও বাড়ে। হামাস বলছে, ইসরায়েলের রাজধানী লক্ষ্য করে অন্তত ১৩০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে হামাস।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েল জানিয়েছে, আয়রন ডোম ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে একের পর এক রকেট হামলা প্রতিরোধ করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও আক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার রকেটের আঘাতে দুইজন নিহত হয়েছে। গাড়িতে রকেটের সরাসরি আঘাত লাগায় নিহত হয়েছে অন্য এক নারী। রকেট হামলায় আহত ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
এদিকে হামাসের হামলার তীব্রতায় দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাতে রাজধানী তেল আবিব শহরে সাইরেন বাজিয়ে সকলকে ঘুম থেকে তোলা হয়। হামলা থেকে বাঁচাতে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদ ভূগর্ভস্থ বাংকারে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এদিকে হামাসের রকেট হামলায় ভারতীয় এক নারী নিহত হয়েছেন। তিনি কাজের সূত্রে ইসরায়েলে বসবাস করতেন। নিহত ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে একথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআই।
৩১ বছর বয়সী নিহত ওই নারীর নাম সৌম্য। তিনি ইসরায়েলের আশকেলন শহরে বসবাস করতেন। মঙ্গলবার স্বামীর সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলার সময় হামাসের ছোঁড়া রকেট তার বাড়িতে আঘাত হানে এবং ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
এছাড়া ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে যে সব অঞ্চলে ফিলিস্তিনি এবং আরবরা আছেন, সেসব অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এদিকে হামাসের রকেট হামলার জবাবে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একের পর এক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইহুদীবাদী এই দেশটির দাবি, প্রথমে ড্রোন দিয়ে ওয়ার্নিং ফায়ার করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে গাজায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার ইসরায়েলের বিমান হামলায় ভূখণ্ডটির একটি ১৩ তলা ভবন সম্পূর্ণ ধুলোয় মিশে গিয়েছিল। মঙ্গলবার একটি নয়তলা ভবনে হামলা করা হয়। ওই ভবনটি ওষুধ কোম্পানির অফিস, চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
মার্কিন সংবাদসংস্থা এপি জানিয়েছে, ওই বাড়ি থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে তাদের অফিস। সেখানেও ধুলো ঢুকে যায়। নিজেদের কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাও।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
টিএম