গত প্রায় দুই মাস ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর গত তিন দিন ধরে ভারতে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুহারে কিছুটা নিম্নমূখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুক্রবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সেটিই জানান দিচ্ছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার দেশজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ২৬ হাজার ১২৩ জন , আর এ রোগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৮৭৯ জন রোগী।

আগের দিন বৃহস্পতিবার ভারতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৩ হাজার ১২২ জন। তার আগের দিন বুধবার করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭২০ জন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার ভারতে মৃত্যু হয়েছিল ৩ হাজার ৯৯৪ জনের। অবশ্য তার আগের দিন বুধবার দেশটিতে মারা গিয়েছিলেন ৪ হাজার ২০৫ জন, যা এ পর্যন্ত ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত ভারতের দুই রাজ্য দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। দিল্লিতে প্রথমবারের মতো দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের কম দেখা গেছে শুক্রবার। ওই দিন রাজধানী নয়াদিল্লি ও তার আশপাশের জেলাগুলোতে ‘করোনা পজিটিভ’ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৫০৬ জন।

দিল্লির রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছেন, গত ১০ এপ্রিলের পর এই প্রথমবার দিল্লিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজারের কম দেখা গেল।

পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রেও। প্রায় পুরো এপ্রিল ও মের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজারের ওপরে থাকলেও শুক্রবার সেখানে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজারের কম।

ভারতে সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি, কেরালায়। তার পর বছর জুড়ে চলতে থাকে এই রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

গত বছর নভেম্বরের দিকে অবশ্য কমতে শুরু করেছিল ভারতে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুহার। ফেব্রুয়ারি মাসে এই হার ছিল সর্বনিম্ন। সে সময় গড়ে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ হাজারেররও কম।

কিন্তু মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফের বাড়তে শুরু করে সংক্রমণের হার। এপ্রিলে তা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে যত সংখ্যক সক্রিয় করোনা রোগী আছেন, তার প্রায় ৫০ শতাংশই ভারতে।

এসএমডব্লিউ