ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স দম্পতির ঘরে এসেছে নতুন অতিথি । ক্যালিফোর্নিয়ায় ৪ জুন মেগান মার্কেল কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। প্রিন্স হ্যারি ও মার্কেল কন্যার নাম রাখা হয়েছে লিলিবেট ডায়না। এর মধ্যে এই নাম রাখা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

রাজকন্যার পুরো নাম রাখা হয়েছে লিলিবেট ‘লিলি’ ডায়ানা মাউন্টব্যাটেন-উইন্ডসর। লিলিবেট রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ডাকনাম আর রাজকন্যার মাঝের নাম রাখা হয়েছে দাদি ডায়ানাকে স্মরণ করে। লিলিবেট ব্রিটিশ রাজপরিবারের সিংহাসনের অষ্টম উত্তরাধিকারী।

লিলিবেট ডায়ানার জন্মের খবরে ব্রিটিশ রাজপরিবার আনন্দিত। প্রিন্স উইলিয়াম ও তার স্ত্রী কেট উইলিয়াম লিলিবেটের জন্ম নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। ব্রিটিশ এই রাজকীয় দম্পতির আবারও বাবা-মা হওয়ার খবর শুনে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

অবশ্য আনন্দের খবর সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোতে আলোড়ন তুললেও গত মার্চের শুরুর দিকে মার্কিন টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মেগান ও হ্যারি দম্পতি ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ এনেছিলেন; যা সারা বিশ্বকে হতবাক করেছিল। 

শিশু লিলির নাম নিয়ে বিতর্ক

রাজকন্যা লিলির জন্ম হয়েছে সবে চারদিন। এর মধ্যে তার নাম হয়ে উঠছে রাজনৈতিক ইস্যু। হ্যারি এবং মেগানের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘লিলির নাম রানী এলিজাথের ডাক নাম অনুসারে রাখা হয়েছে।’ 

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে শৈশবকালে তার দাদা জর্জ আদর করে লিলিবেট ডাকতেন। স্বামী প্রিন্স ফিলিপও স্ত্রীকে ছোটবেলার নাম ধরে সম্মোধন করতেন। এদিকে হ্যারির প্রয়াত মা লেডি ডায়ানার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিলিবেটের মাঝের নামটি রাখা হয়েছে ‘ডায়ানা’।

এতে ব্রিটিশ কিছু ট্যাবলয়েড ও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার অনেকেই মেগান মার্কেলের প্রতি বেশ স্পষ্টভাবেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

হ্যারি ও মেগানের রাজকীয় দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের বিরুদ্ধে সমালোচকদের মতে, সম্প্রতি স্বামী হারানো বিধবা রানীকে অপমান করার জন্য তাদের কন্যার জন্য লিলিবেট নামটি বেছে নিয়েছেন। 

অন্যরা অবশ্য এই নামকরণকে হ্যারি ও মেগানের পক্ষ থেকে রাজপরিবারের সাথে ‘পুনর্মিলন’ এর প্রস্তাব হিসেবে দেখছেন।

যুক্তরাজ্যের মেট্রো ট্যাবলয়েড এ বলা হয়, লিলিবেট নাম রাখায় রানীর প্রতি হ্যারি ও মেগান দম্পতির গভীর শ্রদ্ধারই প্রতীক। অপরদিকে ডেইলি মেইলের মতে, প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল কি নাম প্রকাশের আগে রাজতন্ত্রের অনুমতি নিয়েছেন? 

এসব যুক্তি কেন আসে?

লিলিবেট ডায়ানা উত্তরসূরি হিসেবে অষ্টম স্থানে রয়েছে এবং একদিন হয়ত নিজেই সিংহাসনে বসতে পারে। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর এবং তার পুত্র প্রিন্স চার্লস রাজা হলেই কেবল লিলি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজার নাতনি হিসাবে রাজকন্যা হতে পারবেন।

লিলির জন্ম হয় প্রিন্স হ্যারি ও মেগান রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পরে। কাজেই তাদের অবস্থান নির্ভর করে আদালতের ওপর। 

রাজ পরিবারের সদস্যদের কঠোর নিয়মকানুন মেনে চলতে হয় এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক মিলিয়ন রয়্যাল ভক্ত এবং সাংবাদিক রয়েছেন যারা তাদের পোশাক, পারিবারিক ছবিসহ নানাকিছু পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। তাই লিলি নামটিকে ঘিরে বিতর্ক ক্ষমতার প্রশ্নের সাথে জড়িত।

গত মার্চের শুরুর দিকে আমেরিকার টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মেগান এবং হ্যারি দম্পতি ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে বর্ণবাদের অভিযোগ তোলেন, যা আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেছে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

এএস