করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৪০ লাখের গণ্ডি। নিজস্ব হিসাবের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১৮ জুন) সকালে এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। করোনা মহামারিতে বৈশ্বিক মৃত্যুর সংখ্যা বৃহস্পতিবারই ৪০ লাখ পার হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থাটি।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মতো কয়েকটি দেশে করোনায় নতুন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেকটা কমে এলেও বিশ্বজুড়ে এখনও অনেক দেশেই দ্রুতগতিতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে করোনার ভারতীয় ধরন বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতেও বিশ্বের অনেক দেশ তার নাগরিকদের জন্য করোনা টিকা নিশ্চিত করতে রীতিমতো সংগ্রাম করছে।

রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত রোগীর মৃত্যু প্রথম ২০ লাখে পৌঁছাতে এক বছরেরও বেশি সময় নিয়েছিল। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দ্বিতীয় ২০ লাখ পার করতে সময় লেগেছে মাত্র ১৬৬ দিন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যায় শীর্ষ পাঁচে থাকা দেশগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত, রাশিয়া এবং মেক্সিকো। বিশ্বের মোট মৃত্যুর প্রায় ৫০ শতাংশই মূলত এই পাঁচটি দেশের। অন্যদিকে জনসংখ্যার হিসেবে মৃত্যুর হার বিবেচনায় ওপরের দিকে রয়েছে পেরু, হাঙ্গেরি, বসনিয়া, চেক রিপাবলিক এবং জিব্রাল্টার।

রয়টার্সের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারিতে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো। এসময়ে বিশ্বে শনাক্ত হওয়া প্রতি ১০০ জন করোনা রোগীর মধ্যে ৪৩ জনই ছিলেন এই অঞ্চলের। গত এক সপ্তাহ ধরে মৃত্যুর হার বিবেচনায় তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রথম ৯টি দেশের সবগুলোই লাতিন আমেরিকার।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল, উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেট থেকেই প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে।

দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম যে ব্যক্তি মারা যান, তার ওই মার্কেটে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ৬১ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তি যখন মারা যান, তখনও এই রোগের নাম নির্দিষ্ট করা হয়নি। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।

করোনায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, চীন থেকে গোটা বিশ্বে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো একধাপ এগিয়ে গিয়ে কোভিড-১৯ কে ‘‘চীনা ভাইরাস’’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

যদিও, চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি, করোনাভাইরাসের উত্‍‌স নির্দিষ্ট কোনো একটা জায়গা নয়। একাধিক উত্‍‌স থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

সূত্র: রয়টার্স

টিএম