করোনার সবচেয়ে বিধ্বংসী ধরন ডেল্টা ও ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের প্রথম অভিযোজিত ধরন কাপ্পার বিরুদ্ধে মানবদেহে কার্যকর প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম ফাইজার-বায়োএনটেক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই তথ্য জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে সম্প্রতি সেই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের অভিযোজিত ধরন ডেল্টা ও কাপ্পার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধী অ্যান্টিবডিতে সক্ষম ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজের করোনা টিকা।

এর আগে গত সপ্তাহে ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (পিএইচই) জানিয়েছিল, ফাইজার অথবা অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ টিকা যারা নিয়েছেন, তাদের ডেল্টায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতলে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ৯০ শতাংশ কম থাকে।

এক বিবৃতিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিধ্যালয় ও পিএইচই-এর গবেষণা প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার নির্বাহী মেনে প্যাঙ্গালোস বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি বিশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও পিএইচই যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাকে স্বাগত জানাচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এর মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণিত হলো- ডেল্টার বিরুদ্ধে আমাদের টিকা কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।’

গত শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর শীর্ষ গবেষক সৌম্য স্বামীনাথান জানিয়েছিলেন, সংক্রমণের দিক থেকে বর্তমানে মূল করোনাভাইরাস এবং তার অন্যান্য সব অভিযোজিত ধরনকে ছাড়িয়ে গেছে ডেল্টা।

গত বছর অক্টোবরে ভারতে প্রথম শনাক্ত হয় করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা। ডব্লিউএইচও-এর তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৮০ টি দেশে ডেল্টায় আক্রান্ত রোগী আছেন।

ভারতে চলমান করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত দুই মাসে সরকারি হিসেবেই মারা গেছেন ২ লাখের বেশি মানুষ, আক্রান্ত ছাড়িয়েছে কোটির সংখ্যা। আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশটিতে গত দু’মাসের ধ্বংসযজ্ঞের জন্যও দায়ী করোনার ডেল্টা ধরন।

এছাড়া, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে ভারতের করোনা টিকা কোভ্যাক্সিনকে ফাঁকি দিতে সক্ষম ডেল্টা।

একবার করোনা থেকে সেরে ওঠার পর আবারও এ রোগে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের নিয়েও গবেষণা করেছেন অক্সফোর্ডের গবেষকরা। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে শনাক্ত হওয়া ধরন গ্যামায় যাদের আক্রান্তের রেকর্ড আছে, তারাই এই রোগে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।

অন্যদিকে ব্রিটেনে শনাক্ত হওয়া করোনার অভিযোজিত ধরন আলফায় আক্রান্ত হওয়ার পর যারা সেরে উঠেছেন, তাদের পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এছাড়া ডব্লিউএইচওর অনুমোদিত যে কোনো করোনা টিকা এই ধরনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি গঠনে সক্ষম বলেও জানানো হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ